ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

শিশুদের স্ক্রিন টাইম সমস্যা নয়, সমস্যা কন্টেন্টে: গবেষণা

প্রকাশিত: ১৯:৫৬, ৩১ জুলাই ২০২৫

শিশুদের স্ক্রিন টাইম সমস্যা নয়, সমস্যা কন্টেন্টে: গবেষণা

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে শিশুরা অনেক বেশি সময় কাটাচ্ছে মোবাইল, ট্যাবলেট ও কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে। এতে অভিভাবকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বেড়েছে—এই অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম কি শিশুর মেজাজ, ঘুম বা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে? অনেকেই মনে করেন, বেশি স্ক্রিন ব্যবহারে শিশুদের মধ্যে রাগ, মন খারাপ, ঘুমের অভাব বা আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। এই উদ্বেগ শুধু সাধারণ অভিভাবকদের মধ্যে নয়, প্রযুক্তি জগতের শীর্ষ ব্যক্তিরাও ছিলেন সতর্ক—অ্যাপলের স্টিভ জবস কিংবা মাইক্রোসফটের বিল গেটস, দুজনেই তাঁদের সন্তানদের স্ক্রিন ব্যবহারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতেন।

তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সব স্ক্রিন টাইম খারাপ এমন নয়। ব্রিটেনের মনোবিজ্ঞানী প্রফেসর পিট এচেলস জানান, স্ক্রিন ব্যবহারের সঙ্গে শিশুদের মানসিক সমস্যার মধ্যে সরাসরি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং অনেক সময় শিশুর একাকিত্ব, পারিবারিক অশান্তি বা সামাজিক যোগাযোগের অভাব—এই সব কারণেই বেশি প্রভাব পড়ে তাদের মানসিক অবস্থায়। তাই স্ক্রিন নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কেমন ধরনের কনটেন্ট তারা দেখছে, কতটা সময় দেখছে এবং সেই সময়টিতে তাদের মানসিক পরিস্থিতি কেমন।

গঠনমূলক ও শিক্ষামূলক স্ক্রিন কনটেন্ট যেমন উপকারী হতে পারে, তেমনি একটানা অন্ধকারাচ্ছন্ন বা হতাশাজনক ভিডিও দেখলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। শিশুরা যখন বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করে, শেখার ভিডিও দেখে বা পরিবারের সঙ্গে একসাথে কিছু দেখে, তখন তা এক ভিন্ন ধরনের সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অভিজ্ঞতা তৈরি করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এক বছরের নিচে শিশুদের একদমই স্ক্রিন না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। দুই থেকে চার বছরের শিশুদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করা হয়েছে।

অতএব, স্ক্রিন টাইম একা কোনো সমস্যার কারণ নয়। বরং শিশুরা কী দেখছে, কতক্ষণ দেখছে, কাদের সঙ্গে দেখছে এবং সেটা তাদের আবেগ-অনুভূতির উপর কেমন প্রভাব ফেলছে—এসব দিক বিবেচনাই সবচেয়ে জরুরি। অভিভাবকরা যদি সচেতনভাবে এবং গাইডলাইন অনুযায়ী প্রযুক্তি ব্যবহারে শিশুদের সহায়তা করেন, তাহলে স্ক্রিন অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষতির বদলে উপকারই করতে পারে।


শেখ ফরিদ 

×