
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলার টেটমা গ্রামে কালো জাদুর অভিযোগ তুলে একই পরিবারের পাঁচজনকে পিটিয়ে, নির্যাতন করে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় আদিবাসী ওরাও সম্প্রদায়ের উপর এই হামলা চলে গভীর রাতে।
ঘটনার সূত্রপাত গ্রামের বাসিন্দা রামদেব মাহাতোর শিশু সন্তানকে কেন্দ্র করে। অসুস্থ শিশুটিকে সুস্থ করতে ডাকা হয় স্থানীয়ভাবে আধ্যাত্মিক জ্ঞানধারী হিসেবে পরিচিত বাবুলাল ওরাওকে। কিন্তু শিশুটির মৃত্যু হলে বাবুলালকে কালো জাদু চর্চার অভিযোগে দায়ী করা হয়। এরপরই গোটা গ্রাম চড়াও হয় বাবুলাল ও তার পরিবারের ওপর।
সারা রাত ধরে বাবুলাল, তার স্ত্রী সীতাদেবী, পুত্র মানজিত ওরাও, আত্মীয় আরানিয়া দেবী এবং কাকা কাকাতরকে বেধড়ক মারধর ও অকথ্য নির্যাতনের পর জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহগুলো বস্তাবন্দী করে পানিতে ফেলে দেয় গ্রামবাসীরা।
সকাল পাঁচটার দিকে ওই পরিবারের এক ছোট শিশুর ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত চারজনের মধ্যে তিনজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আরেকজনকে ধরতে অভিযান চলছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে প্রায় পুরো গ্রামবাসী এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ।
টেটমা গ্রামের আকাশ-বাতাস এখন স্তব্ধ, ভারী স্বজনহারাদের কান্নায়। গোটা ভারতের সচেতন মহলে ও সামাজিক মাধ্যমে এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। আদিম কুসংস্কার, গুজব এবং গুজবের ভিত্তিতে গণপিটুনির ঘটনা যে এখনো সমাজে কতটা ভয়ানকভাবে সক্রিয়, বিহারের এই বর্বরতা তারই জ্বলন্ত প্রমাণ।
শেখ ফরিদ