ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্কে সংবাদ সম্মেলন 

নিষেধাজ্ঞা দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যাস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ১২:১০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিষেধাজ্ঞা দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যাস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা দেয়াটা যুক্তরাষ্ট্রের একটা অভ্যাস। কোনো কারণ ছাড়াই র‌্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছি এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছি। 

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে হোটেল লটে প্যালেসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্কে পৌঁছান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

র‌্যাবের কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একসময় সারাদেশে একই সঙ্গে ৪৯৫টি স্থানে বোমা হামলা হয়েছিল। বিচারকের এজলাসে, বিদেশি রাষ্ট্রদূতের উপরও বোমা হামলা হয়েছে। সারা দেশে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার কারণে দেশ সন্ত্রামুক্ত হয়েছে।

র‌্যাব কর্মকর্তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিষয়টা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যাপার। সরকারের পক্ষ থেকে কারণ জানতে চাওয়া হলেও তারা কোনো কারণ জানাতে পারেনি। পৃথিবীর বহু দেশে বহু মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।

সীমান্তে মিয়ানমানের গুলি সম্পর্কে এক প্রশ্নর জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তে দুটি দলের মধ্যে মারামারি হচ্ছে। সেখান থেকে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে মাঝে মাঝে দু’একটি গুলি চলে আসছে। এটা বাংলাদেশিদের টার্গেট করে গুলি করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আমরা প্রতিবাদ করেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে তারা অঙ্গীকার করেছে। 

তিনি বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আর কোনো রোহিঙ্গা ঢুকতে পারবে না। সীমান্ত পাহারা অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশে ঢুকতে না পেরে চীনে যাচ্ছে। 

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা অচিরেই তাদের দেশে ফিরে যাবে এই আশা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ইতোমধ্যে মিয়ানমার কিছু রোহিঙ্গা ফেরৎ নিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারও কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ভাষণে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরতের ব্যাপারে জাতিসংঘ এবং বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন। তার ওই ঐতিহাসিক ভাষণে রোহিঙ্গা ইস্যু, ১০ লাখ মানুষের বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ, শিশুস্বাস্থ্য, ভ্যাকসিন, এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ গত ১৩ বছরে সরকারের অভাবণীয় সাফল্যের কথা তুলে ধরবেন বলেও জানান তিনি। 

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সকালে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে অংশগ্রহন করেন। পরে নিউক্লিয়ার টেস্ট বান ট্রিয়েটি অরগানাইজেশনের নির্বাহী সেক্রেটারি রবার্ট ফ্লয়েড পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে পারমানবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা জানান তিনি। পারমাণবিক অস্ত্রের পরিবর্তে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক সম্পদের ব্যবহার করা উচিত বলে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। এছাড়া ডিজিটাল কো-অপারেশন অরগানাইজেশন-ডিসিও এর সেক্রেটারি জেনারেল দিমা আল ইয়াহিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহনের অনুরোধ জানান।

এমএইচ

×