
ছবি: সংগৃহীত।
লিভার বা যকৃৎ আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত পরিষ্কার করে, হজমে সহায়তা করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। তবে দীর্ঘদিন অস্বাস্থ্যকর খাবার, অতিরিক্ত মদ্যপান, ওষুধের অপব্যবহার কিংবা ভাইরাল হেপাটাইটিসের কারণে লিভার ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার ড্যামেজ প্রাথমিক পর্যায়ে খুব একটা উপসর্গ না দিলেও কিছু লক্ষণ দেখে আগেই সতর্ক হওয়া যায়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ-
১. স্থায়ী ক্লান্তি ও দুর্বলতা:
লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে শরীর ঠিকমতো শক্তি তৈরি করতে পারে না, ফলে সবসময় ক্লান্তি ও অবসাদ লাগে।
২. চোখ ও ত্বকে হলদে ভাব (জন্ডিস):
লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিলিরুবিন নামে এক ধরনের পদার্থ রক্তে জমতে থাকে, যার ফলে চোখ ও ত্বক হলদে হয়ে যায়।
৩. পেট ফুলে যাওয়া বা ডান পাশে ব্যথা:
লিভারে ফোলা বা প্রদাহ হলে পেটের ডান পাশে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব হতে পারে। কখনও কখনও পেট ফুলেও দেখা দিতে পারে।
৪. হজমের সমস্যা ও বমিভাব:
লিভার সঠিকভাবে কাজ না করলে হজমে সমস্যা দেখা দেয়। খাবারের রুচি কমে যায়, বমিভাব ও বমি হতে পারে।
৫. মূত্র ও মল পরিবর্তন:
লিভার সমস্যা হলে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ বা বাদামি হয়ে যায়, মলের রং ফ্যাকাশে হতে পারে।
৬. ত্বকে চুলকানি ও সহজে ফুসকুড়ি:
লিভারের সমস্যা হলে রক্তে টক্সিন জমে ত্বকে চুলকানি ও বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দিতে পারে।
৭. সহজে রক্তপাত বা কালশিটে দাগ পড়া:
লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, ফলে সামান্য ধাক্কাতেও শরীরে কালশিটে পড়ে যেতে পারে।
সতর্কতা ও করণীয়:
এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা, লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT), অতিরিক্ত মদ্যপান ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন লিভার সুরক্ষায় সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, লিভার রোগকে অবহেলা না করে প্রাথমিক অবস্থাতেই সঠিক পদক্ষেপ নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
মিরাজ খান