
ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবেটিস এখন এক বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হয়েছে। পুরুষ-নারী নির্বিশেষে সবাই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীদের ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো অনেক সময় ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়, ফলে তা চিহ্নিত করতে বিলম্ব হয় এবং জটিলতা বাড়ে।
বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় (জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস), পিসিওডি বা হরমোনজনিত সমস্যার কারণে অনেক নারী ঝুঁকির মুখে থাকেন। তাই ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো চেনা ও সচেতনতা জরুরি।
চলুন জেনে নেওয়া যাক নারীদের ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ খেয়াল রাখা দরকার-
১. অতিরিক্ত পিপাসা ও প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি:
ডায়াবেটিস হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে শরীর থেকে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হতে থাকে। এর ফলে অতিরিক্ত প্রস্রাব ও পিপাসা অনুভব হয়।
২. অনিয়মিত মাসিক চক্র:
নারীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকলে পিরিয়ডের সময় অনিয়ম দেখা দিতে পারে। এটি পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS)-এর সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারে।
৩. দুর্বলতা ও অতিরিক্ত ক্লান্তি:
রক্তে শর্করা থাকলেও শরীর তা কাজে লাগাতে পারে না। ফলে নারীরা সহজেই দুর্বল হয়ে পড়েন এবং দিনভর ক্লান্তি অনুভব করেন।
৪. ওজন বাড়া বা হঠাৎ কমে যাওয়া:
ডায়াবেটিসের ফলে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, যা ওজন হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা না খেয়েও ওজন কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
৫. ঘন ঘন ইনফেকশন:
ডায়াবেটিসে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে নারীদের ক্ষেত্রে মূত্রনালির ইনফেকশন, চুলকানি বা ছত্রাকজনিত সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
৬. ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তন:
ঘাড়, বগল বা শরীরের ভাঁজে কালচে দাগ পড়া (Acanthosis Nigricans) ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের লক্ষণ হতে পারে।
৭. ঘন ঘন ক্ষুধা ও দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা:
রক্তে গ্লুকোজ থাকার পরও তা কোষে পৌঁছাতে না পারায় ক্ষুধা বেড়ে যায়। একই সঙ্গে চোখের লেন্সে প্রভাব পড়ে বলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে পারে।
সতর্কতা ও করণীয়:
এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত। নিয়মিত চেকআপ, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীরা অনেক সময় নিজেদের অসুস্থতা লুকিয়ে রাখেন বা গুরুত্ব দেন না। তাই নিজের যত্ন নেওয়া, উপসর্গ বুঝে চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
মিরাজ খান