ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান 

মো. জাফরুল হাসান, কালকিনি, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ৮ আগস্ট ২০২৫

জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান 

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

মাদারীপুরের কালকিনি ও ডাসারে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। তবে নতুন ভবন না থাকায় এসব পরিত্যক্ত ভবনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এদিকে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নামের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আজ শুক্রবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালকিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান। 

উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তর ও সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় ১৪৮টি ও ডাসার উপজেলায় ৫১টিসহ দুই উপজেলায় মোট ১৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার অধিকাংশ বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এর মধ্যে ২২ টি বিদ্যালয়ের ভবন অত্যন্ত  ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তর। এর মধ্যে উপজেলার দঃ কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩৮ নং উত্তর বাঁশগাড়ি নতুন চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮২ নং উত্তর চরফাতে বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৫২ নং এনায়েতনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩২ নং চরফাতে বাহাদুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১২৯ নং আলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ের ভবন খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়টিতে পুরাতন জরাজীর্ণ রুমে ক্লাস নিচ্ছে শিক্ষকরা। 

এদিকে টিনশেডের তৈরি বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনে বর্ষার মৌসুমে টিনের চালা দিয়ে পানি পরে শিক্ষার্থীদের বইখাতা ভিজে যায়। এছাড়া গরমের সময় প্রচণ্ড তাপে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে বেশ কয়েকটি পাকা ভবনও রয়েছে চরম ঝুঁকি পূর্নের মধ্যে। তার পরেও উপায়অন্তঃ না পেয়ে নতুন ভবন না থাকায় এসব পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এতে করে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পাঁকা ও টিনশেড ভবনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক,পিলারের কংক্রিট ধসে পরে রড বের হয়ে মরিচা ধরে গেছে এবং বৃষ্টি আসলে টিনের চালা দিয়ে পানি পরে। তাই যেকোনো সময় ধসে পড়লে বড় ধরনেন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা চরম ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান চালিয়ে আসছি। আমরা নতুন ভবন চাই।

কালকিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান ও ডাসার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসিমা বেগম বলেন, আমাদের কালকিনি ও ডাসার উপজেলার মোট ১৯৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২২ টি বিদ্যালয় জরাজীর্ণ ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এসব বিদ্যালয়ে পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চালিয়ে আসছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নামের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। 

এ ব্যাপারে কালকিনি ও ডাসার উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফ-উল আরেফীন বলেন, ইতিমধ্যে দুই উপজেলায় বেশ কিছু নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এবং আগামীতে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

মিরাজ খান

আরো পড়ুন  

×