
ছবি: সংগৃহীত
চুলের যত্নে নিয়ম করে তেল মাখেন, শ্যাম্পু করেন ঠিকঠাক — তবুও গুচ্ছ গুচ্ছ চুল পড়ছে? এটা শুধুই বাইরের সমস্যার কারণে হচ্ছে, তা নাও হতে পারে। শরীরে এক ধরনের খনিজের ঘাটতি থেকেও এমনটা হতে পারে। অনেকেই জানেন না, কিন্তু ম্যাগনেশিয়ামের অভাব চুল ঝরার অন্যতম কারণ হতে পারে।
কেন ম্যাগনেশিয়াম এত জরুরি?
যতই অল্প প্রয়োজন হোক, ম্যাগনেশিয়ামের অভাব হলে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। হাড়, স্নায়ু, হরমোন এমনকি চুলের স্বাস্থ্যের সাথেও জড়িত এই খনিজটি।
চুলের ফলিকল রক্ষা করে:
ম্যাগনেশিয়াম শরীরে ক্যালশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা চুলের গোড়াকে (ফলিকল) ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়।
প্রদাহ কমায়:
মাথার ত্বকে প্রদাহ হলে চুল পড়া বেড়ে যায়। ম্যাগনেশিয়ামে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি’র সঠিক কাজে সাহায্য করে:
চুলের জন্য ভিটামিন ডি খুবই দরকারি। আর ম্যাগনেশিয়াম এই ভিটামিনের শরীরে শোষণ ও কাজে সহায়তা করে।
হরমোন ও মানসিক স্বাস্থ্যে ভূমিকা:
ম্যাগনেশিয়ামের অভাব মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়াতে পারে। অনেক সময় মানসিক চাপের কারণেও চুল পড়া বেড়ে যায়।
কীভাবে ম্যাগনেশিয়ামের অভাব দূর করবেন?
খাবারের মাধ্যমে:
-
কলা
-
পালংশাক
-
বাদাম (কাঠবাদাম, আখরোট, চিনাবাদাম, কাজু)
-
বীজ (কুমড়োর বীজ, চিয়া সিড)
-
ডার্ক চকলেট
-
মিলেট, দুধ, দই ইত্যাদি
চুলের যত্নে:
-
কাঠবাদাম বা কুমড়োর বীজের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলোর মধ্যেও ম্যাগনেশিয়াম থাকে।
সাপ্লিমেন্ট:
চিকিৎসকের পরামর্শে ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যায়। তবে আগে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝে নিতে হবে শরীরে আসলেই ঘাটতি আছে কি না।
বাড়তি কিছু পরামর্শ:
-
চুল পড়া কমাতে মরসুমি যত্নে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়।
-
তেল মালিশ করলে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়ে, চুলের গোড়া মজবুত হয়।
-
যেকোনও হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করার আগে মাথার ত্বকের ধরন অনুযায়ী নির্বাচন করা উচিত।
-
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও চুল পড়তে পারে। তাই সমস্যাটা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খুব বেশি চুল পড়ে, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো।
চুল পড়ার সমস্যার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে একটা কারণ যদি হয় ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি, তাহলে এখন থেকেই সচেতন হওয়া জরুরি।
চুল শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যের বিষয় না, এটি শরীরের ভেতরের অবস্থারও প্রতিফলন।
শিহাব