
ছবি: সংগৃহীত
পর্যটনশিল্পকে ঘুরে দাঁড় করাতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এবার দেশটি ৪০টি দেশের নাগরিকদের জন্য শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের ভিসা ফি সম্পূর্ণ মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও জাপানের নাগরিকদের জন্য ভিসা-মুক্ত ভ্রমণ চালু থাকলেও সম্প্রতি এই সুবিধার আওতা আরও বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, পাকিস্তান, ইরান, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অস্ট্রেলিয়াসহ মোট ৪০টি দেশ এখন এই ভিসা ফি-মুক্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এই তালিকায় আরও আছে—জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, স্পেন, পোল্যান্ড, কাজাখস্তান, সৌদি আরব, নেপাল, ফ্রান্স, চেক প্রজাতন্ত্র, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ইসরায়েল, বেলারুশ, কাতার, ওমান, বাহরাইন, নিউ জিল্যান্ড, কুয়েত ও তুরস্ক।
এই ভিসা-মুক্ত সুবিধার ফলে তালিকাভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরা সহজেই নির্ধারিত মেয়াদে সংশ্লিষ্ট দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন, যা পর্যটন ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শ্রীলঙ্কার পর্যটনমন্ত্রী বিজিত হেরাথ জানান, ভিসা ফি বাতিলের ফলে কিছু আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের পর্যটকদের গড়ে ৫০ থেকে ৬০ ডলার ভিসা ফি দিতে হয় শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের জন্য। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে এই ব্যয় একেবারেই থাকছে না।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লাখ পর্যটককে স্বাগত জানিয়ে প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করতে চায় শ্রীলঙ্কা। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে দেশটিতে প্রায় ২০ লাখ ৫০ হাজার পর্যটক সফর করেছিলেন, যা থেকে আয় হয়েছিল ৩ বিলিয়ন ডলার।
পর্যটকদের আকর্ষণে শ্রীলঙ্কা সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন চালু করেছে। এতে বিভিন্ন দেশের ১২ জন জনপ্রিয় ভ্লগারকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেশটির ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলে ধরা হয় বৈশ্বিক দর্শকদের সামনে।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ঘুরতে গেছেন ১৩ লাখ পর্যটক, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে বেশি পর্যটক যায় ভারত থেকে। এরপরই রয়েছে যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ শ্রীলঙ্কা অনেক সম্ভাবনাময় দেশ হলেও পর্যাপ্ত প্রচার ও আধুনিক পরিকল্পনার অভাবে পিছিয়ে ছিল। পর্যটন বিশ্লেষকদের মতে, ভিসা ফি মওকুফ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও, টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন আরও বড় পরিসরে পরিকল্পনা, উন্নত পর্যটনসেবা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শক্তিশালী প্রচারণা।
মুমু ২