
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, এই রোগের এক পূর্বধাপ রয়েছে—যেটিকে বলা হয় প্রি-ডায়াবেটিস। সময়মতো শনাক্ত ও জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
প্রি-ডায়াবেটিস কী?
প্রি-ডায়াবেটিস হলো এমন এক অবস্থা, যেখানে রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তবে এখনো টাইপ-২ ডায়াবেটিস হিসেবে চিহ্নিত হবার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। অনেকেই এই পর্যায়ে পৌঁছানোর পরও বুঝতে পারেন না, কারণ এতে কোনো সুস্পষ্ট লক্ষণ নাও থাকতে পারে।
‘ডায়াবেটিস ইউকে’-এর ক্লিনিক্যাল অ্যাডভাইজার এস্থার ওয়ালডেন এবং ইউনিভার্সিটি অফ নটিংহ্যাম-এর ড. অ্যামান্ডা অ্যাভেরি বলছেন—পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং সক্রিয় জীবনধারা মেনে চললেই প্রি-ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
কেন হয় প্রি-ডায়াবেটিস?
বয়স, ওজন, জাতিগত পরিচয়, কম শারীরিক সক্রিয়তা, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার, ইনসুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস ইত্যাদি বিষয় প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে পেটের চর্বি বেশি হলে ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে।
প্রতিরোধ ও মোকাবেলার কার্যকর উপায়
১. ওজনের ১০% কমানো
ডা. রয় টেইলরের গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের মোট ওজনের মাত্র ১০% কমালেই লিভার ও অগ্ন্যাশয়ে জমা চর্বি কমে গিয়ে ডায়াবেটিস পুরোপুরি রিভার্স করা সম্ভব হয়।
২. ওজন কমিয়ে ধরে রাখা
শুধু কমালেই হবে না, ওজন যেন আবার না বাড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। ভিগান, নিরামিষ বা লো কার্বোহাইড্রেট ডায়েট অনুসরণ করলে এটি দীর্ঘমেয়াদে সহজে বজায় রাখা যায়।
৩. এড়িয়ে চলার মতো খাবার:
মিষ্টি পানীয় (সফট ড্রিংকস)
প্রক্রিয়াজাত মাংস
হোয়াইট ব্রেড, ক্যান্ডি, পেস্ট্রি
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও অতিরিক্ত আলু
৪. যেসব খাবার উপকারী:
ব্লুবেরি, আপেল, আঙ্গুরসহ রঙিন ফল
সবুজ ও মূলযুক্ত শাকসবজি
গোটা শস্য
কম চর্বিযুক্ত দুধ, দই, পনির
মিষ্টি ছাড়া চা ও কফি
আতঙ্ক নয়, সচেতনতা জরুরি
ডা. অ্যাভেরি বলছেন, “প্রি-ডায়াবেটিস ধরা পড়া মানেই টাইপ-২ ডায়াবেটিস অবশ্যম্ভাবী নয়। বরং এটি একটি সতর্কবার্তা, যাতে জীবনযাত্রা ঠিকঠাক করে স্বাস্থ্য রক্ষা সম্ভব হয়।” ছোট ছোট পরিবর্তনও বড় ফল দিতে পারে—এটাই চিকিৎসকদের পরামর্শ।
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা
নোভা