
ছবিঃ সংগৃহীত
ভাবুন তো, আপনি প্রতিদিন ঠিকঠাক খাচ্ছেন, ঘুমাচ্ছেন, তবুও সারাদিন ক্লান্ত লাগে, শরীর ম্যাজম্যাজ করে, মাঝে মাঝে ব্যথাও হয়। এর কারণ হতে পারে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। এটা এমন এক পুষ্টি যা আমরা অনেক সময় গুরুত্ব দিই না, অথচ আমাদের শরীরের অনেক জরুরি কাজ এর উপর নির্ভর করে।
ভিটামিন ডি শুধু হাড় মজবুত রাখে না, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হরমোন ঠিক রাখে, এমনকি মেজাজ ভালো রাখতেও সাহায্য করে!
সূর্যে থাকলেই চলবে না!
আমরা অনেকেই ভাবি, "রোদ তো পাচ্ছি, ব্যাস হয়ে গেল!" কিন্তু বাস্তবতা হলো, আপনি যদি নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন, ঘরের ভেতরে থাকেন বা এমন জায়গায় থাকেন যেখানে সূর্য খুব একটা দেখা যায় না—তাহলে রোদ থেকেই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া কঠিন। তাই খাওয়া-দাওয়া দিয়েই এর ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে যেসব খাবারে:
- স্যালমন মাছ: ভাবুন তো, একটুখানি রান্না করা স্যালমন খেলেই আপনি পেয়ে যাবেন প্রায় ৫০০ IU ভিটামিন ডি। বন্য ধরা হলে আরও বেশি।
- ম্যাকারেল ও সার্ডিন: ছোট মাছ হলেও দারুণ পুষ্টিকর। সার্ডিন তো ছোট্ট একটা টিনেই আপনার দৈনিক চাহিদার প্রায় ৪০% দিয়ে দিতে পারে!
- ডিমের কুসুম: অনেকে কুসুম ফেলে দেন, কিন্তু এখানেই থাকে ভিটামিন ডি। রোজ একটা ডিম খেলে শরীর উপকার পায়।
- গরুর লিভার: হ্যাঁ, সবার পছন্দ না ঠিকই, কিন্তু পুষ্টিতে ঠাসা। ভয় পেলে পেটেতে বা কিমার সাথে মিশিয়ে খান, বুঝতেই পারবেন না!
- ফর্টিফায়েড দুধ ও দই: দোকানে যেসব দুধ বা দই কিনছেন, অনেকগুলোতেই ভিটামিন ডি যোগ করা থাকে। শুধু লেবেল দেখে নিশ্চিত হোন।
- UV আলোতে রাখা মাশরুম: নিরামিষভোজীদের জন্য দারুণ একটা বিকল্প। প্রাণীজ উৎস শক্তিশালী না হলেও কাজে দেয়।
আরো ভালোভাবে শোষণের জন্য টিপস:
ভিটামিন ডি ভালোভাবে কাজ করে যদি আপনি তা খান স্বাস্থ্যকর চর্বির সাথে। যেমন অলিভ অয়েল, বাদাম, বা অ্যাভোকাডো দিয়ে রান্না করে খেলে শরীর বেশি ভালোভাবে শোষণ করে। আর হ্যাঁ, মাছ ভাজার বদলে বেক বা স্টিম করুন—ভিটামিন নষ্ট হবে না।
শুধু খাবারেই সব হবে না...
পুষ্টিবিদরাও বলেন, প্রতিদিনের খাবার দিয়েই সব ভিটামিন ডি পাওয়া কঠিন। বিশেষ করে আপনি যদি আগে থেকেই ঘাটতিতে ভোগেন। তাই প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নিন শরীরে ঘাটতি আছে কিনা। আর থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট নিন।
আমরা যতই স্বাস্থ্য সচেতন হই, ছোট ছোট বিষয়ের দিকে খেয়াল না রাখলে শরীর কিন্তু ঠিকমতো কাজ করে না। তাই অন্তত সপ্তাহে দুই দিন তৈলাক্ত মাছ, নিয়মিত ডিম, দুধ বা দই খাওয়া এবং রোদ পোহানো অভ্যাস করুন।
ভালো থাকা মানেই তো শরীর-মন ভালো রাখা। নিজের যত্ন নিন, শুরু হোক আপনার ভিটামিন ডি জার্নি আজ থেকেই!
মারিয়া