
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানা হাজত থেকে আসামী গোলাম রাব্বানীর (২৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার তাদের জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির থাকার কথা।
অভিযুক্তরা হলেন- ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর বানিয়াচং থানার দায়িত্বরত এসআই মনিরুল ইসলাম, এএসআই রুহুল আমিন ও নারী কনস্টেবল ইয়াছমিন বেগম।
ওই তিনজনসহ সাক্ষী দেওয়ার জন্য আরও ১০ জনকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির করানোর জন্য গত ৪ মে বানিয়াচং থানার ওসিকে নোটিশ দিয়েছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ আতিকুল হক।
সাক্ষীদের মধ্যে থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আবু হানিফ ও উত্তর-পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান রয়েছেন। এছাড়া ঘটনাস্থল বড় বাজারের তিন দোকানীকে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নোটিশে বলা হয়।
মৃত গোলাম রব্বানী বানিয়াচং উপজেলা সদরে নন্দিপাড়া মহল্লার মিহির উদ্দিনের ছেলে। ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে হাজতের ভেতরে পরনের কাপড় দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তার দেহ পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার বড় বাজার থেকে গোলাম রাব্বানীকে একটি ইজিবাইক চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে থানা হাজতে রাখা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দেখা যায়, হাজতের ভেতরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তার দেহ ঝুলছে। পরে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ গোলাম রব্বানীকে প্রহার করে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে বলে তার পরিবার অভিযোগ তুললে ঘটনার চারদিন পর ৩০ ডিসেম্বর এসআই মনিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দেয় এবং অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আলাদা ৩টি বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। জানা গেছে- এসআই মনিরুল এখন গাজীপুর জেলা পুলিশে কর্মরত।
রাব্বানীর বড় ভাই মঈন উদ্দিন বলেন- আমার ভাইয়ের বয়স মাত্র ১৭ বছর ছিল। সে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। তাকে পুলিশ একের পর এক চুরির মামলা দিয়ে জীবন দুর্বিসহ করে তোলে। ঘটনার দিন তাকে যখন এসআই মনিরুল হক নিয়ে যান তখন আমি জিজ্ঞেস করলে জানিয়েছিলেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় নেওয়া হচ্ছে। পরে আমার ভাইয়ের লাশ ফেরৎ দিয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আতিকুল হক, অভিযুক্ত ৩ পুলিশ সদস্য ও ১০ জন স্বাক্ষীকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির করার জন্য নোটিশ জারীর সত্যতা নিশ্চিত করেন। পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কি অভিযোগ? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি তদন্তাধীন ব্যাপার। আমরা তাদের সাথে বিস্তারিত কথা বলব।
রাজু