
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা যেখানে হাজারো মানুষের জীবন ছুঁয়ে যায় দুই ভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের ছায়ায়। এখানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা ও শত বছরের পুরনো শ্রীশ্রী সীতাকালি মায়ের কালী মন্দির। একে অপরের প্রতিবেশী হলেও তাদের সম্পর্ক কেবল স্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি সম্প্রীতির এক প্রাণবন্ত নিদর্শন।
স্থানীয়রা জানান, বহু বছর ধরে এই দুটি প্রতিষ্ঠান তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে আসছে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে। উৎসব বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সময় একে অপরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে কখনো পিছপা হন না এলাকার মানুষ। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যেমন কালী মন্দিরের পূজায় কোনো বাধা দেয় না, তেমনি মন্দিরের ভক্তরাও মাদ্রাসার নিয়ম-কানুন ও ধর্মীয় পরিবেশের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাশীল।
এলাকার প্রবীণরা বলেন, “ধর্মের ভিন্নতা থাকলেও আমাদের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ। এখানে কখনোই ধর্মীয় কারণে কোনো সংঘাত হয়নি।” এমনকি দুই ধর্মের মানুষ একে অপরের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ান—চিকিৎসা, বিপদে-আপদে কিংবা সামাজিক কর্মকাণ্ডে।
বাংলাদেশে একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও সহনশীল সমাজ গড়ার প্রত্যাশা যেখানে প্রায়শই নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে, সেখানে হাটহাজারীর এই দৃশ্য সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ধর্ম নয়, মানবতা এবং পারস্পরিক সম্মান-ই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তি।
হাটহাজারীর এই ধর্মীয় সহনশীলতার নিদর্শন হতে পারে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য এক উজ্জ্বল পথনির্দেশ।
মিমিয়া