গত ২৯ সেপ্টেম্বর ছিল বিশ্ব হার্ট দিবস
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ছিল বিশ্ব হার্ট দিবস। দিবসটি নিয়ে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নেওয়া হয়েছিলো নানা কর্মসূচি। জনসাধারণকে সচেতন করতে নানাভাবেই সচেতন করা যায়। যেমনÑ লেখালেখিও সচেতনতার একটি মাধ্যম।
আজ লিখব হৃদরোগ নিয়ে।
হৃদরোগ : হৃদরোগ বলে হৃৎপি-ের অসুস্থতা বোঝায়। হৃদরোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১. জন্মগত : হৃৎপিণ্ডের দেওয়ালে ছিদ্র, ভাল্বের গঠনে ত্রুটি ইত্যাদি। মোট হৃদরোগের ১-২%।
২. অর্জিত
ক) বাতজ্বর জনিত, যাকে রিউমেটিক হার্ট ডিজিজ (জঐউ) বলা হয়। ইহা হার্টের ভাল্বের ক্ষতি করে। ইহার হার ০.৩-৩%।
খ) অবশিষ্ট প্রায় ৯৭-৯৮% হৃদরোগই মূলত হার্টের নিজের রক্তনালীর প্রতিবন্ধকতা বা ব্লকজনিত। সাধারণত হৃদরোগ বা হার্ট ডিজিজ বলতে রক্তনালীর প্রতিবন্ধকতা জনিত হার্টের কষ্টকে বোঝায়, যাকে ইংরাজিতে হার্ট ব্লকেজ বা সিএডি (ঈঅউ)বা সিএইচডি (ঈঐউ) বলা হয়।
লক্ষণ ভেদে ইহাকে ২ ভাগ করা যায়-
১. এঞ্জিনা (অহমরহধ)
ইহা আবার ২ প্রকার ক) স্থিতিশীল (ঝঃধনষব) এবং খ) অস্থিতিশীল (টহংঃধনষব)
২. হার্ট অ্যাটাক (ঐবধৎঃ অঃঃধপশ)
কি কি কারণে হার্টের সিএডি হতে পারে?
১. নেতিবাচক জীবন দৃষ্টি,
২. ভুল খাদ্যাভ্যাস,
৩. ধূমপান/জর্দা,
৪. উচ্চ রক্তচাপ,
৫. ডায়াবেটিস,
৬. পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব,
৭. অতিরিক্ত ওজন,
৮. বংশ ক্রম,
৯. মানসিক বৈকল্য (দুশ্চিন্তা, হতাশা, ক্রোধ, অতৃপ্তি, লোভ, হিংসা, অহঙ্কার ইত্যাদি)।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
রক্ত : সিবিসি, লিপিড প্রফাইল, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, আরবিএস, টিএসএইচ, সিরাম ইলেকট্রোলাইট।
হার্ট : ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাপি, ইটিটি, সিটিএনজিওগ্রাপি।
ফুসফুস : এক্স-রে
চিকিৎসা
১. রক্ত পাতলা করার ওষুধ যেমন- ক্লোপিড, আস্পিরিন ইত্যাদি।
২. বুকের ব্যথা কমানোর ওষুধ যেমনÑ নিডোকার্ড, মেটাকার্ড ইত্যাদি।
৩. চর্বি কমানোর ওষুধ যেমন স্ট্যাটিন গ্রুপ।
৪. রক্ত চাপের ও ডায়াবেটিসের ওষুধ।
৫. ব্লক কমানোর ওষুধ এবং ব্লক বাইপাস করানোর জন্য ইসিপি বা নেচারেল বাইপাস। বর্তমানে কাঁটা-ছেঁড়া ছাড়াই আমরা আমাদের ক্লিনিকে হার্টের ব্লকের বাইপাস করে থাকি, ডিটক্স করিয়ে হার্টের ব্লকের সাইজ করে থাকি।
৬. মানসিক চাপ কমানোর জন্য কাউন্সেলিং
যেমনÑ
ক) শুকুর গুজার অর্থাৎ যেমন আছি তাতেই সন্তুষ্ট থাকার অনুশীলন করা।
খ) আশাবাদী, আত্মতৃপ্তি অর্জনের জন্য আত্মিক অনুশীলন (গবফরঃধঃরড়হ) করা।
গ) লোভ-লালসা সংযত করা।
ঘ) হিংসা-বিদ্বেষ, রাগ-অহঙ্কার দূর করার অনুশীলন করা।
ঙ) প্রতিযোগিতা-প্রতিহিংসা, পরশ্রীকাতরতা মানসিক ব্যাধি দূর করার অনুশীলন। সর্বোপরি সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করা অর্গানিক খাবার-দাবার খাওয়া। তাহলেই সুস্থ থাকবে আপনার হার্ট।
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও
চিফ কন্সালটেন্ট-মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিমিটেড।
১, ১/১ রূপায়ণ তাজ, (৬ তলা), কালভার্ট রোড, নয়াপল্টন, ঢাকা।
প্রয়োজনে : ০১৩২৪-৭৩-০৫-১৩, ০১৩২৪-৭৩-০৫-১৮