
ছবি: সংগৃহীত
শৈশব প্রত্যেকের জীবনের মধুর একটি সময়। শৈশব জীবনের দিনগুলো ছিল দুরন্তপনা, দুষ্টুমি আর সারাদিন ছোটাছুটি করে দৌড়ে বেড়ানোর, বৃষ্টিতে ভেজা এক অনন্য মুহূর্ত। আমার শৈশব আজও আমাকে ডাকে।
সত্যিই, আজও বারবার ফিরে যেতে মন চায় ফেলে আসা সেই শৈশবের দিনগুলোতে। মনে পড়ে, অবাধে স্কুল ছুটি শেষে বৃষ্টিতে ভেজা ফুটবল খেলা, ঘোরা-ফেরা আর বেড়ানোর সেই সব দিনগুলোর কথা।
সবারই তো মনে পড়ে সেই শৈশবের কথা। ছেলেবেলার দিনগুলো শুধুই স্মৃতি হয়ে আছে।
আজও কাঁদায় ফেলে আসা সেই দিনগুলো। মনে পড়ে, ছেলেবেলার সেই শৈশব। তাই এখনো একটু সুযোগ পেলেই চলে যাই গ্রামের বন্ধুদের আড্ডায়।
আমাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বারাহীর গ্রামে। আমাদের ইউনিয়নটি সদর উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন এবং আমাদের গ্রামটি সবচেয়ে বড়। প্রায় ৬টি গ্রাম মিলে গঠিত হয়েছে এই গ্রামটি। আমাদের গ্রামে সকল পেশাজীবী মানুষই শান্তিতে বসবাস করেন। নেই কোনো ঝগড়া, নেই হানাহানি। সকলেই শান্তিপ্রিয়।
একটু সময় পেলেই আড্ডা জমে আমাদের গ্রামের খেলার মাঠে। দিনগুলোর স্মৃতিমাখা দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে ওঠে—প্রায় ২৫ বছর আগের স্মৃতি। মনে পড়ে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় শিক্ষকদের বকুনি। অনেকে বলেন, সবচেয়ে রাগী শিক্ষকের পিটুনির কথাও। সবাই যেন কোথায় হারিয়ে যাই।
একদিন সকাল ৮টার দিকে, অল্প পানির ময়লা পুকুরে কয়েকজন বন্ধু মিলে গোসল করছিলাম। ওদিকে স্কুল খোলা। মা খুঁজতে খুঁজতে সেই পুকুরে লাঠি হাতে হাজির। কী আর করা! তাড়াতাড়ি গোসল বন্ধ করে বাড়ি ফিরলাম। গোসল করলে যেখানে শরীর পরিষ্কার হওয়ার কথা, সেখানে আমাদের শরীরে যেন ময়লার স্তর জমে গেছে। কোনোভাবে পরিষ্কার হয়ে স্কুলে দৌড় দিলাম। আমাদের প্রাইমারি স্কুলটি আবার বাড়ির পাশেই ছিল। একে তো দেরিতে পৌঁছলাম, তার ওপর শরীর ভেজা। যাই হোক, দুটো বেত্রাঘাত খেয়ে ক্লাসে ঢোকার অনুমতি দিলেন ম্যাডাম।
আমাদের বিদ্যালয়ের নাম ছিল বারাহীর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সকল শিক্ষকই খুব ঠাণ্ডা মেজাজের ছিলেন। শুধু প্রধান শিক্ষক ছিলেন খুব কড়া। এমন কোনো শিক্ষার্থী ছিল না, যে স্যারের হাতে শাস্তি পায়নি। আজও স্যারের কথা মনে পড়ে। হয়তো স্যারের সেই কড়া শাসনের কারণেই আজ এত দূর আসতে পেরেছি। আজ স্যার নেই, তবু তাঁর সেই শাসনের কথা ঠিকই মনে পড়ে।
আসিফ