ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অভিনেতা সিদ্দিকের সঙ্গে ডিপজলের ভুল বোঝাবুঝির অবসান

প্রকাশিত: ২১:২৩, ৩০ মে ২০২৩; আপডেট: ২১:৩৮, ৩০ মে ২০২৩

অভিনেতা সিদ্দিকের সঙ্গে ডিপজলের ভুল বোঝাবুঝির অবসান

অভিনেতা ডিপজল ও সিদ্দিক

কিছুদিন আগে বরেণ্য অভিনেতা ও ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল দেশজুড়ে। সবাই যখন এ নায়কের শোকে কাতর তখন তার আসন থেকে এমপি নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে সমালোচিত হন অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান।

এতে তার ওপর অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। এক ভিডিও বার্তায় সিদ্দিককে এক হাত নিয়েছিলেন তিনি। ফলে দুজনের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এবার সে দ্বন্দ্বের অবসান হলো। এ খবর সামাজিক মাধ্যমে সিদ্দিক নিজেই দিয়েছেন।

মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে ডিপজলের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেন সিদ্দিক। সঙ্গে ছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ ও চিত্রনায়ক জায়েদ খান। ছবিটির সঙ্গে সিদ্দিক লেখেন, ‘আলোচনা শব্দটির সাথে সবাই কমবেশি পরিচিত। আমি সবসময়ই মনে করি, যেকোনো সমস্যা সৃষ্টি হয় ক্ষোভ থেকে। এই ক্ষোভকে পুষে রাখলে অন্য কিছু রূপ নেয়। সচেতন ও ভালো মানুষ হিসাবে ক্ষোভকে অন্য রুপ দেওয়া উচিত নয়।’

এরপর তিনি লেখেন, ‘আলোচনায় মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে আর আমরা সামান্য ভুল বুঝাবুঝি শেষ করতে পারব না। সেটা কী করে হয়? তাহলে আমরা কিসের মানুষ? আল্লাহপাক আমাদেরকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসাবে সৃষ্টি করেছেন। তাই আলোচনার মাধ্যমে আজ বড় ভাই ডিপজল ভাইয়ের সাথে যে সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল তার অবসান হলো।’

সিদ্দিক আরও লেখেন, ‘মধ্যস্থতা হিসেবে ছিলেন ডিবি প্রধান হারুন ভাই এবং বন্ধু চলচ্চিত্র নায়ক জায়েদ খান। তাই আমি সবাইকে বলব, আসুন আগামী জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সকল প্রকার সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ,এবং সকল দলের অংশগ্রহণমূলক সুন্দর একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপহার দেই দেশ ও জাতিকে।’

এর আগে নায়ক ফারুকের মরদেহ কবরে নামানোর আগেই সিদ্দিক তার আসন থেকে এমপি নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ডিপজল বলেছিলেন, ‘মামা (ফারুক) যখন থেকে অসুস্থ, তখন থেকেই তিনি (সিদ্দিক) এমপি নির্বাচনের জন্য লাফালাফি শুরু করেছেন। তিনি এমপি নির্বাচন করতেই পারেন। যে কেউই নির্বাচন করতে পারেন। কিন্তু মামার (ফারুক) লাশ কবরে নামানোর আগেই তিনি ঘোষণা দিয়ে দিলেন তার আসনে নির্বাচন করবেন। এতে চরম কষ্ট পেয়েছি এবং মনোক্ষুণ্ন হয়েছি।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘নেত্রী যদি পছন্দ করেন, তাহলে ওনাকে মনোনয়ন দিতেই পারেন। তবে ওই আসনে অনেক মানুষ আছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আছেন। স্থানীয় অনেক প্রভাবশালীও আছেন।’

এসময় ক্ষুব্ধ ডিপজল বলেছিলেন, ‘একটা মানুষকে ইজ্জত দিতে পারতেন। ফারুক যেমন-তেমন মানুষ নন, তিনি তারকাদের কিংয়েরও ওপরে। ওনার মৃত্যুর ৭ দিন কিংবা ৪০ দিন পর নির্বাচন নিয়ে আপনি প্রকাশ্যে আসতে পারতেন। এত লাফালাফি করাটা আপনার ঠিক হয়নি। না করাটাই ভালো মনে করি আমি। আপনার এমন আচরণে প্রচণ্ড মনোক্ষুণ্ন এবং ব্যথিত হয়েছি আমি। মানুষ রঞ্জিত করে, তবে নিজেকে এতটা রঞ্জিত করা আপনার মোটেও ঠিক হয়নি।’

গত ১৬ মে সকালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ফারুকের। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২০২১ সালের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি।

চিকিৎসকের পরামর্শে তখন দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তখন থেকেই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে শুরু করেন ফারুক। সেখানে দুই বছর চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

এমএস

×