শাকিব খান-বুবলি
সোশ্যাল মিডিয়ায় কল্যাণে আজকাল তারকাদের কোনো কিছুই গোপন থাকে না। কোথায় কে কি করছেন নিমেষেই সবাই জানতে পারছেন। এমনকি কারও কারও ঘরের খবরও প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় তারকারা নিজেরাই তা প্রকাশ করছেন অবলীলায়। এতে কার লাভ হচ্ছে কার ক্ষতি হচ্ছে সেদিকে তাদের কোনো ভ্রƒক্ষেপ নেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ এতে বিনোদন পেয়ে থাকেন তাতে সন্দেহ রাখে না।
সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি, বিদ্যা সিনহা মিম, অপু বিশ্বাস ও বুবলীর ফেসবুক পোস্টগুলোতে সেটিই দেখা যায়। একজন অন্যজনের প্রতি সহজেই ফেসবুকে রাগ-অনুরাগ প্রকাশ করছেন। আর তাতেই তাদের ফলোয়াররা শুরু করেন পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে মন্তব্য। শুরুটা পরীমণির হাত ধরেই। হুট করেই সুখের সংসারে আশান্তির ইঙ্গিত দেন এ অভিনেত্রী। যার সেই অশান্তির মূলে নায়িকা মিম। তাকে উদ্দেশ্য করে পরীমণি লেখেন, ‘নিজের জামাইকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিত ছিল।’
এদিকে পরীমণির স্ট্যাটাসের জবাব দিলেন তিনিও। ফেসবুকে লিখেন, ‘পরাণ’ ও ‘দামাল’ সিনেমার আকাশছোঁয়া সাফল্য আমাকে স্বার্থহীন ভালোবাসায় ভাসাচ্ছে। আমি আপ্লুত, অভিভূত। বলতে পারি, জীবনের সেরা সময় পার করছি। ঠিক এই সময়ে একটা পক্ষ আমার পথচলায় ঈর্ষান্বিত হয়ে, আমাকে থামিয়ে দিতে, আমাকে জড়িয়ে নানা ধরনের কুৎসা রটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।’ সোশ্যালযুদ্ধ এখানেই থেমে যায়নি। পরক্ষণেই পরীমণি আবারও মিমকে উদ্দেশ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
এমনকি সেখানে তাদের কিছু স্ক্রিনশর্টও প্রকাশ করেন। যেখানে রাজ-মিমের ‘মাখামাখি’ পরীর সংসারের জন্য কাল হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। ফেসবুক পোস্টে পরীমণি বলেন, ‘আসেন তা হলে কিছু বিষয় ক্লিয়ার করি। এই যে মিম বলল আমি জেলাসি করলাম তোমার সঙ্গে! এটা ১০ জন আননোন লোকে বলতেই পারে; কিন্তু তুমি কি করে এটি বল? যেখানে পরাণ রিলিজের পর সবখানে আমি বলে আসছি রাজের সঙ্গে তুমি জুটি হয়ে কাজ করো। তোমাদের জুটি দেখতে ভালো লাগে। এটি তোমরাও চাও।’
তিনি বলেন, ‘তোমার মাও সেদিন আমাদের লিভিংরুমে আমার সঙ্গে এ নিয়ে কত কথা বললেন। এই তো সেদিন ইনফিনিটি সিজন ২-এর জন্য তোমাকে নক দিলাম আমি। কি করে ভুলে গেলি রে ভাই। ৫ দিন আগেও আবু রায়হান জুয়েল ভাইকে বললাম রাজ আর মিমকে জুটি করে নেক্সট কাজটা করে ফেলেন ভাই।’ মিমকে উদ্দেশ করে পরীমণি আরও বলেন, ‘কিন্তু বিশ্বাস কর ভাই মিম, রাজের সঙ্গে তোর এই অতি মাখামাখিটা আমার সংসার, আমার বাচ্চা, আমার লাইফ সব কিছুতে ঝামেলা করে দিচ্ছে।
এই যে দামালের তিন মাসের হল রাইটস নিলা রাজ তুমি, তোমরা সবাই এই হলো কাল এখন আমার জীবনের। এখন তোমাদের ব্যবসায়িক ছুতোয় আলাপ চলে রাত-দিন। বিশ্বাস করো তোমাদের এই মাঝ রাত্তিরের ফোনালাপ আমার সত্যিই প্রবলেম করে। আমি একা সারারাত বাচ্চাটাকে সামলাই। এসব বন্ধ করো।’ এদিকে পরীমণির পরপর এমন অভিযোগে মিম সরে দাঁড়ালেন রাজের সঙ্গে জুটি হওয়া থেকে। এ অভিনেতার সঙ্গে জুটি হয়ে আর কোন কাজ করতে চান না বলেই জানান।
তবে কেন পরীমণির এমন স্ট্যাটাস এটি নিয়ে রাজের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। পরীমণি-মিমের রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয় অপু বিশ্বাস ও বুবলীর নাকফুল কা-। বুবলীর জন্মদিনে তাকে শাকিব খান একটি নাকফুল উপহার দিয়েছেন বলে জানান। একটি গণমাধ্যমের সেই খবর শেয়ার করে অপু বিশ্বাস ক্যাপশনে খোঁচা মেরে লেখেন ‘কী যে মজা’। আর এর আগে জুড়ে দিয়েছেন দশটি হাসির ইমোজি, যা নিয়ে মন্তব্যের ঘরে বুবলীকে নিয়ে নানা কথা বলছেন শুভাকাক্সক্ষীরা।
ঢালিউড কুইনের কাছে শাকিব খানের থেকে বুবলীর ডায়মন্ডের নাকফুল পাওয়ার বিষয়টি হাস্যকর মনে হয়েছে এটা পোস্টে স্পষ্ট। অপুর পোস্টের পর ছাড় দেননি বুবলী। তিনিও পাল্টা ইঙ্গিতমূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেখানে অপুর নাম উল্লেখ না করে এক হাত নিয়েছেন। বুধবার (২৩ নভেম্বর) ফেসবুকে ব্যক্তিগত প্রোফাইলে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘একজন হঠাৎ করেই বলে উঠলো ‘আরে ওই বেটি যে আপনাদের ছবিসহ নিউজ তার নিজের ফেসবুক ওয়ালে বাঁধাই করে রাখছে, এটাই তো আপনার মজা। এতেই তো বোঝা যায় তার শয়নে-স্বপনে শুধুই আপনি, হাহাহা।’
এদিকে নাকফুল কা-ে মুখ খোলেন ঢালিউড কিং শাকিব খান। তিনি কোনো নাকফুল উপহার দেননি বলে গণমাধ্যমে জানান। এমনকি অপু বিশ্বাস ও বুবলী দুজনেই তার কাছে অতীত বলেও মন্তব্য করেন। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারকাদের এমন রাগ-ক্ষোভ প্রকাশ একদম ভালো চোখে দেখছেন না সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। এতে সিনেমার মানুষদের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধাবোধ উঠে যাচ্ছে বলেও অনেকে মত প্রকাশ করেন। আবার কেউ কেউ বলেন যখন শিল্পীদের হাতে কাজ থাকে না তখন তারা এমন অনেক কিছুতে জড়িয়ে পড়েন।
