ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় অভিশপ্ত আগস্ট নাটকের মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

শিল্পকলায় অভিশপ্ত আগস্ট নাটকের মঞ্চায়ন

শিল্পকলায় মঞ্চস্থ অভিশপ্ত আগস্ট নাটকের দৃশ্য

দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সদা তৎপর থাকতে হয় তাদের। সেই সুবাদে শেষ নেই কর্মব্যস্ততার। ছুটতে হয় খুনি থেকে চোর-ডাকাতের পেছনে। দমন করতে হয় জঙ্গিবাদী তৎপরতা থেকে নানা অপকর্ম। রুখে দিতে হয় নানা ধরনের নাশকতা। আর দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেই সব পুলিশ সদস্যের দেখা মিলল ভিন্ন রূপে। ঝক্কি-ঝামেলা মেটানোর পরিবর্তে শিল্পকে সঙ্গী করে তারা আবির্ভূত হলেন রাজধানীর নাট্যমঞ্চে। অভিনয় থেকে  নির্দেশনা কিংবা নাট্য রচনার আঙ্গিকÑসবকিছুতেই দেখা মিলল তাদের শিল্পিত দক্ষতার পরিচয়।

এমনকি আলোকসজ্জার কাজটিও করেছেন নিজেরাই। বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার প্রযোজিত সেই প্রযোজনাটির শিরোনাম অভিশপ্ত আগস্ট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বেদনার্ত ঘটনাপ্রবাহকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে নাটকটি। ইতিহাস আশ্রয়ী গবেষণালব্ধ প্রযোজনাটির পরিকল্পনা গবেষণা ও তথ্য সংকলন করেছেন এডিশনাল আইজিপি হাবিবুর রহমান। নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক মো. জাহিদুর রহমান। 
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কাক ডাকা ভোরে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই হত্যাকা-ের করুণ আলেখ্য এবং পূর্বাপর ঘটনা মেলে ধরা হয়েছে প্রযোজনাটিতে। সেই কালরাতে বিপথগামী সামরিক অফিসারদের নারকীয় তা-ব মর্মস্পর্শীভাবে তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। সেই সূত্র ধরে ঘটনাপ্রবাহে উঠে এসেছে খলনায়ক খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে ঘাতক চক্রের মিত্রতা।

উপস্থাপিত হয়েছে মেজর ফারুক, রশীদসহ পর্দার আড়ালে থাকা মাস্টারমাইন্ডদের দেশ দখলের নীলনক্সা তৈরি এবং সে ষড়যন্ত্রে সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পকদের ষড়যন্ত্রের বীজ বুনন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করণসহ নানা বিষয়। ঘটনা প্রবাহে দেখা মেলে আর দশটা সাধারণ দিনের মতোই হত্যাকান্ডের আগ পর্যন্ত ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের কর্মব্যস্ততার চিত্র। যেটা দেখে বোঝারই উপায় ছিল না কিছুক্ষণ পরই বাঙালি জাতির প্রেরণার উৎস এ বাড়ি হয়ে উঠবে বীভৎস মত্যুপুরী। এ ছাড়া খুনি খন্দকার মোশতাকের কুটবুদ্ধি, সামরিক অফিসার মেজর ফারুক, রশীদদের ঠান্ডা মাথার পরিকল্পনাও দেখানো হয়েছে নাটকে।

মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তেও বঙ্গবন্ধুর সাহসী কণ্ঠ ও তার পুত্রের অদম্য প্রতিবাদও উঠে এসেছে কাহিনীতে। বাদ যায়নি শিশু শেখ রাসেলের করুণ আর্তনাদ ও তাকে বাঁচাতে পরীবানুর আকুতি । নাটকের দৃশ্যপটে উঠে এসেছে ৩২ নম্বর বাড়ির প্রতিটি মানুষ। সেই সূত্র ধরে উঠে এসেছে কর্মচারী রমা, পরীবানু, আব্দুল থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তা সিদ্দিকুরের অসীম মমত্ববোধ। তুলে ধরা হয়েছে বাড়ির মানুষদের সাধারণ জীবনযাপনের চিত্রও।
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদুর রহমান, ওমর ফারুক রনি, হাসিবুর রহমান, রেদওয়ান আহম্মেদ, আলী আকবর, আবুল হোসেন, সিফাত, বিপ্লব চন্দ্র পাল, নুসরাত শারমিন, মোস্তাফিজুর রহমান, বিনয় কুমার, তামান্না তমা, রাকিবুল হাসান, মীর ফয়সাল, রুহুল আমীন হিরো, মাহবুবুল আলম সবুজ, মেহেদী হাসান প্রিন্স, শোয়াইবুর রহমান, সোহাগ হোসাইন, সাদিয়া প্রমুখ। 
জাদুঘরে আজ ‘কবিকণ্ঠে কবিতা’ ॥ আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কবি সুফিয়া কামাল অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হবে ‘কবিকণ্ঠে কবিতা’ শিরোনামের আয়োজন। এতে স্বরচিত কবিতাপাঠ করবেন কবি শামস আল মমীন, জুয়েল মাজহার, শিহাব শাহরিয়ার, চঞ্চল আশরাফ, শোয়াইব জিবরান, মাহবুব আজীজ, ভাগ্যধন বডুয়া, ফরিদা ইয়াসমিন সুমী, সোহেল হাসান গালিব ও ফারুক সুমন।
আয়োজন সম্পর্কে কবি শিহাব শাহরিয়ার বলেন, কাহ্নুপা, বিদ্যাপতি, চন্ডিদাস, ভরতচন্দ্র, ইশ^রচন্দ্র গুপ্ত, মাইকেল মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল হয়ে গত শতকের ত্রিশের দশকের পঞ্চপান্ডব, দেশ বিভাগোত্তর ভাষা আন্দোলন পরবর্তী ঢাকাকেন্দ্রিক বাংলা কবিতাচর্চার সূচনা হয়। এই সময়ে বাংলাদেশের অসংখ্য কবি বাংলা কবিতাকে উর্বর করে গেছেন ও করে যাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় নিজস্ব কাব্যভাষায় স্বতন্ত্র ধারা তৈরি করা এই সময়ের কয়েকজন কবি যৌথভাবে স্বকণ্ঠে কবিতা পাঠের আয়োজন করেছে।

×