ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

রাবির ৩ কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করলেন ‘জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি’র নেতা-কর্মীরা

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২০:০৪, ১৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:০৪, ১৭ জুলাই ২০২৫

রাবির ৩ কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করলেন ‘জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি’র নেতা-কর্মীরা

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ কর্মকর্তাকে ‘জুলাই আন্দোলনে’ ছাত্র-জনতার ওপর হামলার দায়ে দায়েরকৃত পৃথক দুটি মামলায় পুলিশে সোপর্দ করেছে ‘জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি’ নামের একটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ আখ্যা দিয়ে কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কার্যালয় থেকে আটক করে প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে আসেন তারা। পরে বেলা আড়াইটায় প্রক্টর দপ্তর থেকে আটককৃতদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আটককৃতরা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সেকশন অফিসার পঙ্কজ কুমার, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ এবং উপ-পরিচালক আমিনুল হক। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০০৮-০৯ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ‘জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি’র আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় ২০-২৫ জন স্থানীয়ের একটি দল আটক করে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বেলা একটার দিকে অভিযুক্তদের নিজ কার্যালয় থেকে আটক করে প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে আসেন ‘জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি’ নামের সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। পরে দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান উপস্থিত হলে পুলিশ প্রশাসন ও সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে তাদের নামে মামলা থাকায় পুলিশে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত হয়। তাদের বিরুদ্ধে নগরের বোয়ালিয়া থানায় একটি করে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা হয়েছিল। মতিহার থানার পুলিশ প্রশাসনের কাছে তাদের সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে ‘জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটি’র আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহ আগে রেজিস্ট্রারকে স্মারকলিপি দিয়ে আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর ৪০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছিলাম। এই কর্মকর্তারা ৫ আগস্ট আমার ভাইদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত। তবে এক সপ্তাহেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে আমরা নিজেরা উপস্থিত হয়ে ৩ জন কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছি। এ খবর পেয়ে বাকিরা পালিয়েছে। পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমাদের আর মাঠে নামতে হবে না। তবে সেটা না হলে আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

তাদের গ্রেফতারের বিষয়ে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় রুজু করা মামলা আছে। বোয়ালিয়া থানার সঙ্গে কথা বলে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি। এখন আইনগত প্রক্রিয়া অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘কেউ মামলার আসামি থাকলে পুলিশ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে ভবিষ্যতে বাইরের লোকজন এসে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আটক করবে—এমন সুযোগ দেওয়া হবে না। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে অবশ্যই পুলিশের মাধ্যমেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ইমরান

×