দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়’
দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়’। নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেধা-মনন এবং শিক্ষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বেশ সুপরিচিত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে আছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তিনি তার ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আস্থার আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি কৃতী শিক্ষার্থীদের জন্য এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম কৃতী শিক্ষার্থীদের পেল স্বীকৃতি ও সংর্বধনা। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাঁকজমকপূর্ণভাবে বরিশাল শহরের একটি স্বনামধন্য হোটেল ‘গ্রান্ড পার্ক’ এ এই কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মেধাকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে মেধাকে প্রকাশ করার ও মেধাবী গড়ে তোলার অন্যতম প্রয়াশ।
আমাদের সেই মেধা দরকার, যেই মেধা যন্ত্রকে দখল করবে। এগিয়ে যাওয়ার প্রধান উপাদান গুণগত শিক্ষা’। এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, প্রথাসিদ্ধ পাঠদানের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। তাদের বিভিন্নরকম সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম দেখে মনে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে যেন এক প্রাণের মেলা বসেছে’। তিনি শিক্ষার্থীদের সুপার স্কিলে অর্জনে মনোযোগী হওয়ার কথা বলেছেন। এজন্য তাদের ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন করা দরকার। তিনি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর চেয়ে শিক্ষকদের দক্ষ বেশি হওয়া জরুরি।
মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম ব্যাচ অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সেশনের অধীনে বিভিন্ন বিভাগের মোট ৭০ জনকে কৃতী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এই ৭০ জন শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়েছিল অনার্সের সর্বোচ্চ ফলাফলের ভিত্তিতে। ৭০ জন কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন দর্শন বিভাগের মো. রিয়াদ মোরশেদ ও প্রাণরসায়ন ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের কৃতী শিক্ষার্থী আরিফা রহমান।
এই কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকসহ উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিস্ট্রার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সেক্রেটারি, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকবৃন্দ। এবং এই অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হিসেবে ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন দিলআফরোজ খানম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. শওকত আলী।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো এমন মহৎ এক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কারণে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে উপাচার্য স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। উপাচার্য স্যার অঙ্গীকার করেছেন আগামীতে এই ধরনের অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য অব্যাহত থাকবে এবং অনুষ্ঠানগুলোও আরও বড় পরিসরে করা হবে।
নিঃসন্দেহে এ ধরনের অনুষ্ঠান অত্যন্ত ইতিবাচক উদ্যোগ, যেটি শিক্ষার্থীদকে বইমুখী করার অন্যতম উপায়। সত্যিকারার্থে একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে এ ধরনের উৎসাহমূলক অনুষ্ঠান কিংবা সংস্কৃতি চলমান সময়ে বড্ড প্রয়োজন। কৃতী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্রতি সেমিস্টারে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তির ব্যবস্থা করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আহ্বান করেছে।