ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

সরকার বাধ্যবাধকতা করলে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন

ইবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত: ২০:১২, ২০ মার্চ ২০২৩

সরকার বাধ্যবাধকতা করলে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। ফাইল ফটো 

গুচ্ছের বিষয়ে নানা ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা উঠে এলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ফের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েকে (ইবি) গুচ্ছে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। 

সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে ইউজিসির আয়োজিত গুচ্ছভূক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সভায় আহ্বান জানানো হয়। 

শিক্ষক সমিতি ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিরোধীতা সত্তে্বও ২০২২-২৩ শিক্ষবর্ষে ইবিকে গুচ্ছেই থাকতে হবে বলে সভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে ইবির শিক্ষকরা এখনো একক পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে শক্ত অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার।

জানা গেছে, ইউজিসির সভায় ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজ বেগম, অধ্যাপক মো. আলমগীর, অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ জন্দ, অধ্যাপক ড. আবু তাহের সহ গুচ্ছভূক্ত ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইউসিজি সচিব ফেরদৌস জামান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাজেনমেন্ট ডিভিশনের পরিচালক জামিনুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে রবিবার বিশ্ববিদ্যলয়ের ১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ গুচ্ছের ভোগান্তি, সমস্যা ও বিভিন্ন সুপারিশ উপাচার্যের কাছে তুলে ধরেছেন। 

এদিকে সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ইবির শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত ও শিক্ষক সমিতি বিষয়টি ইউজিসির কাছে তুলে ধরেন। 

তবে যারা ইতিপূর্বে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিল সেসব বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনোক্রমেই বাইরে যাওয়া যাবে না বলে জানায় ইউজিসি। এছাড়া সভায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির বিদ্যমান সংকট ও সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভর্তিতে বিগত বছরের জটিলতাগুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় এবং ভর্তি কীভাবে আরও সহজ ও শিক্ষার্থীবান্ধব করে তোলা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আর্থিক বিষয়, সরকারী সিদ্ধন্তসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে এর আগেও শিক্ষক সমিতিকে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই জায়গাগুলো পার করে আমরা এই সিদ্ধান্তে এসেছি। উপাচার্য আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো। 
তবে আমরা এখনো একক পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে আছি। প্রত্যকটা বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব একটা আইনে চলে। ইউজিসি যেমন একটা নিয়মের মধ্যে চলে, ইবিও তেমন। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি এসি (একাডেমিক কাউন্সিল) মিটিংয়ের বিষয়টি ইউজিসির মিটিংয়ে তুলে ধরেছি। তারা বলেছে, এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। যারা গুচ্ছে ছিল কোনোক্রমেই তাদের গুচ্ছের বাইরে যাওয়া যাবে না। এটি আমাদের শিক্ষকদের জানাবো। যেহেতু তারাই পরীক্ষা নেবে তাই তাদের মতামতের বাইরে আমি কিছু করতে পারি না। তবে সরকার বা ইউজিসি বাধ্যবাধকতা করলে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ আমাদের নিয়ন্ত্রণ, টাকা পয়সা সব তো তারা দেয়।

ইউজিসি সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছে। আগামী বছর থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইউনিক পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২২ বিশ্ববিদ্যালয় এবারো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে। এখন তারা নিজেরা বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
 

এসআর

×