ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

অধ্যায় : দশম (অম্ল, ক্ষারক ও লবণ) মোহাম্মদ শাহ্জাহান

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০০:২৪, ১০ মার্চ ২০২২

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান

সিনিয়র শিক্ষক গভ. টেকনিক্যাল হাইস্কুল, চাঁদপুর। ১। অম্ল বা এসিড কী? এর বৈশিষ্ট্য লিখ। উত্তর : এসিড : যে সমস্ত যৌগে প্রতিস্থাপনিয় হাইড্রোজেন আয়ন বিদ্যমান এবং যা পানিতে দ্রবীভূত করলে বিয়োজিত হয়ে (ঐ+) দান করে, ঐ সকল যৌগকে অম্ল বা এসিড বলে। যেমন : সালফিউরিক এসিড (H2SO4), হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl). এসিডের বৈশিষ্ট্য : (i) এসিড নীল লিটমাসকে লাল করে। (ii) এসিড দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন (ঐ+) দেয়। (iii) এসিড টক স্বাদ যুক্ত হয়। (iv) এসিড ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে। Mg (OH)2 + 2HCl MgCl2+2H2O (v) এসিড কার্বনেট যুক্ত লবণের সাথে বিক্রিয়া করে CO2 গ্যাস উৎপন্ন করে। CaCO3 + 2HCl CaCl2 + H2O + CO2(g). ২। ক্ষারক কী? ক্ষারকের বৈশিষ্ট্য লিখ। উত্তর : ক্ষারক : ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল যৌগমূলকের অক্সাইড ও হাইড্রোক্সাইড যা এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে ক্ষারক বলে। যেমন : Na2O, Fe(OH)2, CaO ইত্যাদি ক্ষারক। ক্ষারকের বৈশিষ্ট্য : (i) ক্ষারক লাল লিটমাসকে নীল করে। (ii) ক্ষারক পানিতে (OH-) আয়ন তৈরি করে। (iii) ক্ষারক সাধারণত পিচ্ছিল হয়। (iv) ক্ষারক কটু স্বাদযুক্ত হয়। (v) সকল ক্ষারক পানিতে অদ্রবণীয়। যেমন Fe(OH)2, CaO ইত্যাদি পানিতে অদ্রবণীয়। ৩। ক্ষার কী? উত্তর: ক্ষার : ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল যৌগমূলকের হাইড্রোঅক্সাইড (OH-) যা পানিতে দ্রবণীয়, এগুলোকে ক্ষার বলে। যেমন : Ca(OH)2, NaOH, KOH ইত্যাদি পানিতে দ্রবণীয় তাই এদেরকে ক্ষার বলে। ৪। লবণ কী? সমীকরণসহ লিখ। উত্তর : লবণ: এসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন নিরপেক্ষ পদার্থ যার ঋণাত্মক অংশ এসিড থেকে এবং ধনাত্মক অংশ ক্ষার থেকে আসে এরূপ যৌগগুলোকে লবণ বলে। যেমন : সোডিয়াম ক্লোরাইড (ঘধঈষ), পটাশিয়াম নাইট্রেড (কঘঙ৩) । লবণ উৎপাদনের সমীকরণসমূহ : (i) Ca(OH)2 + H2SO4 CaSO4 + 2H2O লবণ (ii) NaOH + HCl NaCl + H2O লবণ (iii) Mg + 2HCl MgCl2 + H2 লবণ (iv) Na2CO3 + 2HCl 2NaCl + H2O + CO2 লবণ ৫। সকল ক্ষারই ক্ষারক কিন্তু সকল ক্ষারক ক্ষার নয় কেন থ ব্যাখ্যা কর। উত্তর : ক্ষারক সাধারণত ধাতুর অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইড। কিছু কিছু ক্ষারক আছে যেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়, আবার অনেক ক্ষারক আছে যেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয়না। এই পানিতে দ্রবনীয় ক্ষারকসমূহকে ক্ষার বলে। NaOH, KOH, Ca(OH)2 ইত্যাদি ক্ষার কারণ এরা পানিতে দ্রবণীয়। অপরপক্ষে CuO, FeO, Fe(OH)2 পানিতে দ্রবীভূত হয়না তাই এগুলো শুধুমাত্র ক্ষারক কিন্তু ক্ষার নয়। অতএব আমরা বলতে পারি যে ‘সকল ক্ষারই ক্ষারক কিন্তু সকল ক্ষারক ক্ষার নয়।’ ৬। নির্দেশক কী? উত্তর : নির্দেশক : যে সমস্ত যৌগসমূহ নিজেদের বর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে কোনো একটি বস্তু এসিড, ক্ষারক, না নিরপেক্ষ তা নির্দেশ করে তাদেরকে নির্দেশক বলে। যেমন : লিটমাস কাগজ, মিথাইল অরেঞ্জ, ফেনোফথ্যালিন, ইত্যাদি নির্দেশকগুলো দ্বারা একটি অজানা পদার্থ এসিড, ক্ষারক, না নিরপেক্ষ তা সনাক্ত করতে সাহায্য করে। ৭। মিথেন (CH4) এসিড নয় কেন? উত্তর : আমরা জানি সকল এসিডেই এক বা একাধিক H পরমাণু আছে এবং এরা সবাই পানিতে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) তৈরি করে। যেমন : HCl H+ + Cl- মিথেন হলো CH4। মিথেনে 4টি H পরমাণু আছে কিন্তু মিথেন পানিতে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) উৎপন্ন করে না। ফলে মিথেন এসিড নয়।
×