
ছবি: জনকণ্ঠ
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে তার ‘লাইভ স্কিলিং’ কর্মসূচি চালু করেছে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা । আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সাথে অংশীদারিত্বে এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে।
সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে 'ক্ষুদ্র উদ্যোগের মাধ্যমে এআই সক্ষমতা বৃদ্ধি: নীতি নির্ধারণ, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তি' শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। মেটার এশিয়া-প্যাসিফিক (APAC) অঞ্চলের নিরাপত্তা ও ইন্টিগ্রিটি কর্মসূচির আঞ্চলিক প্রধান রুইসি টিও অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন।
এতে তরুণ ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে উদ্ভাবনী ক্ষমতার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন। এর মূল লক্ষ্য— এআই-এর ব্যবহার ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। এর ফলে দেশে তৈরি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থান, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি (এসডিজি)-এর মহাপরিচালক শিহাব কাদের, সরকারের আইসিটি বিভাগের আওতাধীন অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটু আই) প্রকল্পের জাতীয় পরামর্শক শাহারিয়ার হাসান জিসুন, মেটার এশিয়া-প্যাসিফিকের পাবলিক পলিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন মিলনার, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রুজান সারওয়ার, ‘শিখো’-এর সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা শাহির চৌধুরী, ঢাকা এআই ল্যাবসের সিইও অলি আহাদ প্রমুখ।
সরকারি ও বেসরকারি খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রযুক্তিবিদসহ ৭৫ জনের বেশি ব্যক্তি অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বিজন ইসলাম।
এই উদ্যোগের আওতায় দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই), স্টার্টআপ ও ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তরুণ ও পেশাজীবীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যেই এটি শুরু হবে। মেটার ব্যবসায়িক বিশেষজ্ঞরা প্রশিক্ষণার্থীদের নির্বাচন করবেন।
অনুষ্ঠানে শিহাব কাদের বলেন, “এআই সত্যিকার অর্থে ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোর জন্য সেবা প্রদানের মাধ্যম। ব্যবসা সম্প্রসারণে উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়াতে এআই ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
সাইমন মিলনার বলেন, “লাইটক্যাসলের সাথে এ উদ্যোগ শুরু করতে পেরে আমরা গর্বিত। মেটার এআই টুলস তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তুত করবে।”
‘শিখো’-এর সিইও শাহির চৌধুরী তার উপস্থাপনায় বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল শিক্ষার রূপান্তর ঘটেছে। ‘ইডিটেক’ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এআই এখন শিক্ষাক্ষেত্রেও কার্যকর।” প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তাঁদের উল্লেখযোগ্য সুপারিশ ছিল,
- এসএমই খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে এআই ব্যবহারের প্রসার
- সেবা খাত সহজীকরণ ও উন্নয়ন
- অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে এআই গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি
- বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়ন
- অবকাঠামোগত উন্নয়ন
- সৃজনশীলতায় এআই প্রয়োগ
এছাড়াও বক্তারা বলেন, জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে প্রযুক্তিখাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘মেটা লাইভ স্কিলিং’ উদ্যোগ বাংলাদেশের এআই যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এর লক্ষ্য হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ ও উদ্ভাবকদের প্রযুক্তি প্রয়োগে সক্ষম করে তোলা, যাতে দেশের বাস্তব চাহিদা পূরণে তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।
শহীদ