ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রে বদলে যাচ্ছে ফার্নিচার মিস্ত্রিদের জীবনধারা

আকিমুল ইসলাম সাজু , কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার,কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ২১ জুলাই ২০২৫

বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রে বদলে যাচ্ছে ফার্নিচার মিস্ত্রিদের জীবনধারা

এক সময় ছিল যখন ফার্নিচার তৈরির জন্য মিস্ত্রিদের হাতেই ছিল পুরো ভরসা। কাঠ কাটা থেকে শুরু করে পলিশিং, নিখুঁত ডিজাইন খোদাই  সবই করতে হতো হাতে হাতে। সেই দিন এখন অনেকটাই অতীত। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে কাঠের কাজ, বদলে গেছে মিস্ত্রিদের জীবনধারাও।

বর্তমানে বাজারে এসেছে নানা ধরনের আধুনিক বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রপাতি, যা কাঠের কাজকে করেছে অনেক সহজ, দ্রুত ও নিখুঁত। প্যানা কাটা, থিকনেস করা, ডিজাইন খোদাই, স্যান্ডিং, এমনকি পালিশ করাও এখন করা যায় মেশিনের সাহায্যে। এতে করে যেমন শ্রম কমেছে, তেমনি উৎপাদনশীলতাও বেড়েছে কয়েক গুণ।

কোটচাঁদপুরের একজন অভিজ্ঞ ফার্নিচার মিস্ত্রি ফারুক হোসেন জানান, "আগে একখানা কাঠ সমান করতে হাতে ঘাম ঝরতো, সময় লাগতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এখন থিকনেস মেশিনে ৫ মিনিটেই কাজ শেষ। আগে ৪ জন লাগতো, এখন ১ জনেই অনেক কিছু করা যায়।"

আরেকজন তরুণ মিস্ত্রি ইব্ররাহীম  বলেন, "আমরা এখন ডিজিটাল মেশিন দিয়ে কাঠে কারুকাজ করি। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন বের করতে এখন আমাদের সময়ও কম লাগে।"

তবে সব সুবিধার মাঝেও কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। এই মেশিনগুলো কিনতে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অনেকেই গ্রুপ করে বা কিস্তিতে মেশিন নিচ্ছেন। তাছাড়া বিদ্যুৎ না থাকলে কাজ আটকে যায়।

হাসিব ফার্নিচার এর মালিক শওকত শেখ জানান, "সরকার যদি ফার্নিচার খাতকে ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে সহজ শর্তে লোন দেয়, তাহলে আরও মিস্ত্রি নিজেদের কাজকে আধুনিকভাবে গুছিয়ে নিতে পারবেন।"

এই খাতে কর্মসংস্থানও বেড়েছে। আগে একজন মিস্ত্রির শিখতে সময় লাগতো ৩-৪ বছর, এখন আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে ৬ মাসেই একজন দক্ষ কর্মী তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।

ফলে বোঝা যাচ্ছে, ফার্নিচার খাতেও প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। এই পরিবর্তন শুধু কাঠ নয়, গড়ে তুলছে নতুন এক সম্ভাবনার ভিত।

Mily

×