ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টাকা খাটিয়ে টাকা বাড়ান: ব্যাংক নয়, এই ৫ জায়গায় টাকা রাখুন

প্রকাশিত: ১৯:০০, ১১ জুন ২০২৫

টাকা খাটিয়ে টাকা বাড়ান: ব্যাংক নয়, এই ৫ জায়গায় টাকা রাখুন

ছবি: সংগৃহীত।

অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে, কিন্তু এখনো অনেকেই জানেন না কোথায় বিনিয়োগ করলে টাকাটা শুধু সুরক্ষিত থাকবে না, বরং বাড়বেও। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ রবার্ট কিওসাকি একবার বলেছিলেন, “আপনি কত টাকা ইনকাম করছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আপনি ইনকামের কতটা ধরে রাখতে পারছেন সেটিই আসল চাবিকাঠি।”

ঠিক এই বিষয়টিই সামনে রেখে আজকের আলোচনায় তুলে ধরা হলো এমন পাঁচটি স্মার্ট অ্যাসেট যেখানে ব্যাংকের বাইরে টাকা রাখলে আপনি ভবিষ্যতের জন্য হতে পারেন অনেক বেশি নিরাপদ।

১. ইমারজেন্সি ফান্ড: ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোকাবেলার প্রথম অস্ত্র
দেশের অনেক মানুষ মাস শেষে ভালো অঙ্কের টাকা ইনকাম করলেও কোনো আর্থিক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলে পরিবারের সবকিছু এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। তাই অর্থনৈতিক স্বস্তির প্রথম শর্ত হচ্ছে একটি শক্ত ইমারজেন্সি ফান্ড তৈরি করা। এই ফান্ড হঠাৎ চাকরি চলে যাওয়া, দুর্ঘটনা কিংবা বড় কোনো অসুস্থতার সময় আপনাকে ধার না করে চলতে সাহায্য করবে।

২. স্বর্ণ (গোল্ড): স্থিতিশীল ও নিরাপদ সঞ্চয় মাধ্যম
ইনফ্লেশনের এই যুগে ব্যাংকে টাকা রেখে তার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়, কিন্তু স্বর্ণের দাম বরং সময়ের সঙ্গে বাড়ে। ফলে এটি এখনো বাংলাদেশ, ভারত কিংবা পাকিস্তানে অন্যতম নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম। এটি সহজে নগদে রূপান্তরযোগ্য এবং অর্থনৈতিক সংকটে মূল্য বাড়ার প্রবণতা থাকে। ধনীরা এই সুযোগটাই নেয় – মন্দার সময় সস্তায় স্বর্ণ কিনে পরে তা থেকে মুনাফা অর্জন করে।

৩. জমি ও প্রপার্টি: স্থায়ী প্যাসিভ ইনকামের উৎস
জমি ও বাড়ি এমন একটি অ্যাসেট যা সময়ের সঙ্গে তার মূল্য শুধু বাড়াতেই থাকে। বাড়ির একাংশে নিজে বসবাস করে অন্য অংশ ভাড়া দিলে তা নিয়মিত আয়ের উৎস হয়ে দাঁড়ায়। এই খাতে বিনিয়োগ শুধু নিরাপদ নয়, বরং স্থায়ী সম্পদ হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও কার্যকর।

৪. নিজস্ব ব্যবসা: চাকরির চেয়ে টেকসই উপার্জনের পথ
চাকরি এখন দিন দিন অনির্ভরযোগ্য হয়ে উঠছে। অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক কাজের বাজার সংকুচিত করছে। ফলে এখনই সময় ছোট করে হলেও নিজের একটি ব্যবসা শুরু করার। অল্প পুঁজিতে স্থানীয় মার্কেটে প্রাসঙ্গিক পণ্যে বা পরিষেবায় বিনিয়োগ করে ধীরে ধীরে একটি ব্যবসা দাঁড় করানোই হতে পারে আপনার বড় অর্থনৈতিক নিরাপত্তার চাবিকাঠি।

৫. স্কিল ও জ্ঞান: এমন সম্পদ যা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না
সবকিছু হারালেও আপনার অর্জিত দক্ষতা ও জ্ঞান কখনোই হারায় না। ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে স্কিল বেসড আর্নিং হবে সবচেয়ে বড় ট্রেন্ড। তাই আজ থেকেই নিজের দক্ষতা বাড়াতে শুরু করুন – সেটা হতে পারে ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, প্রোগ্রামিং কিংবা যেকোনো প্র্যাকটিক্যাল স্কিল। এই বিনিয়োগই আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্যের পথে এগিয়ে নেবে।


আয় করাই শেষ কথা নয়, বরং আয় থেকে সঠিকভাবে অর্থ সঞ্চয় ও বিনিয়োগ করাটাই আসল বুদ্ধিমত্তা। যারা টাকার সঠিক ব্যবস্থাপনা শিখেছে, তারাই ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছে আর্থিক স্বাধীনতা। ব্যাংকে টাকা রেখে শুধু সুদের অপেক্ষায় না থেকে এখনই ভাবুন — কীভাবে আপনি নিজের ভবিষ্যৎকে আরও বেশি সুরক্ষিত ও লাভজনক করে তুলতে পারেন।

নুসরাত

×