ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশ বদলাতে চান? জীবনযাপনে এগিয়ে যেসব দেশ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৩২, ১২ জুন ২০২৫

দেশ বদলাতে চান? জীবনযাপনে এগিয়ে যেসব দেশ

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২৫ সালের গ্লোবাল লাইফ-ওয়ার্ক ব্যালান্স সূচকে কানাডা আবারও প্রমাণ করেছে—স্বাচ্ছন্দ্য ও কাজের ভারসাম্যে দেশটি এখনও অন্যতম সেরা। বিশ্বের ৬০টি দেশের মধ্যে এই সূচকে কানাডা পেয়েছে সপ্তম স্থান। বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্র পড়েছে চরম হতাশাজনক অবস্থানে—প্রায় একেবারে শেষের দিকে, ৫৯তম।

রিমোট নামক এক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। তারা দেশগুলোর নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনের মান, সরকারি ছুটি, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা এবং সামগ্রিক সুখানুভূতির ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা তৈরি করেছে।

যদিও কানাডা গত বছরের তুলনায় দু'ধাপ নিচে নেমে এসেছে, তথাপি এটি আমেরিকা মহাদেশের একমাত্র দেশ যা শীর্ষ ১০-এ জায়গা ধরে রাখতে পেরেছে। সূচকে বলা হয়েছে, “কানাডার কর্মস্থলগুলোতে সময়ানুবর্তিতা ও দায়িত্বশীলতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের প্রতি যথেষ্ট সম্মান দেখানো হয়।”

তালিকার একদম শীর্ষে রয়েছে নিউজিল্যান্ড, তাদের স্কোর ৮৬.৮৭। তাদের সমাজে কর্মজীবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বও সরকারি পর্যায় থেকে স্বীকৃত।

কানাডার স্কোর ৭৩.৪৬, যা একদিকে জননিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো ক্ষেত্রে ভালো পারফরম্যান্সের ফল হলেও, ছুটি ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা কিছুটা সীমিত হওয়ায় স্কোর কিছুটা কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্র পেয়েছে মাত্র ৩১.১৭, তালিকার এক ধাপ নিচে আছে শুধু নাইজেরিয়া। যুক্তরাষ্ট্রে এখনো বেতনভুক্ত ছুটি কিংবা জাতীয় পর্যায়ে গ্যারান্টি করা মাতৃত্বকালীন ছুটি নেই, যা অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় বড় এক ঘাটতি।

রিমোট মোট ১০টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করেছে—এর মধ্যে রয়েছে কাজের গড় সময়, আইনগত ছুটি, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা, খরচ ও মানসিক স্বস্তি।

২০২৫ সালের শীর্ষ ১০ দেশের তালিকা:

১. নিউজিল্যান্ড – ৮৬.৮৭
২. আয়ারল্যান্ড – ৮১.১৭
৩. বেলজিয়াম – ৭৫.৯১
৪. জার্মানি – ৭৪.৬৫
৫. নরওয়ে – ৭৪.২০
৬. ডেনমার্ক – ৭৩.৭৬
৭. কানাডা – ৭৩.৪৬
৮. অস্ট্রেলিয়া – ৭২.১০
৯. স্পেন – ৭১.৯৪
১০. ফিনল্যান্ড – ৭০.৮৬

এই সূচক এক অর্থে মনে করিয়ে দিচ্ছে—উন্নয়ন মানে শুধু অর্থনীতি নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গুণগত মানও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কাজের বাইরে বিশ্রাম, মানসিক স্বস্তি, স্বাস্থ্যসেবা ও পারিবারিক সময়—এই সবকিছু মিলেই গড়ে ওঠে ভারসাম্যপূর্ণ জীবন।কানাডা সে জায়গায় এখনো দৃঢ়ভাবে টিকে আছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যেন আয়নার অপর পিঠ—দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, অনির্ধারিত ছুটি, আর জাতীয় পর্যায়ে অনুপস্থিত কিছু মৌলিক সুবিধা তাদের স্কোরকে প্রায় তলানিতে নিয়ে গেছে।

একসময় বহু আলোচনায় শোনা যেত—কানাডা কি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হতে চলেছে?
তবে সাম্প্রতিক বাস্তবতা বলছে, বরং যুক্তরাষ্ট্রই কি কানাডার ১১তম প্রদেশ হওয়ার চেষ্টা করছে না?

নিশ্চয়ই, সেটা ঘটছে না—তবে এই ব্যতিক্রমধর্মী সূচক অন্তত এই বার্তাই দিচ্ছে:
উন্নত জীবন মানে শুধু আয়ের পরিমাণ নয়, বরং আয় করে বাঁচার মতো সময়টুকুও পাওয়া।

Mily

×