ছবি: সংগৃহীত
২০২৫ সাল এখনও পর্যন্ত ভিডিও গেমপ্রেমীদের জন্য ছিল অসাধারণ এক যাত্রা। বিভিন্ন ঘরানার নতুন ও অভিনব গেমগুলো কেবল বিনোদনই দেয়নি বরং মনস্তাত্ত্বিক, আবেগপ্রবণ এবং কৌশলনির্ভর নানা অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ করেছে গেমিং দুনিয়াকে। গার্ডিয়ানের দুই বিশিষ্ট গেম বিশ্লেষক কেজা ম্যাকডোনাল্ড এবং কিথ স্টুয়ার্ট নির্বাচিত করেছেন বছরের প্রথমার্ধের সেরা গেমগুলো।
ব্লু প্রিন্স
হঠাৎ করেই জনপ্রিয়তায় বিস্ফোরণ ঘটানো এই ধাঁধাভিত্তিক গেমে খেলোয়াড়রা এক রহস্যময় প্রাসাদ অন্বেষণ করেন, যার প্রতিটি কক্ষ ভিন্ন ভিন্ন নকশায় তৈরি। খেলোয়াড় নিজেই নির্ধারণ করে পরবর্তী কক্ষের কাঠামো, নকশা দেখে দরজা পেরোনোর আগে। এটি ৮০’র দশকের ‘জেডএক্স স্পেকট্রাম’ যুগের মতো হাতে আঁকা মানচিত্র তৈরিতে মানুষকে আগ্রহী করে তুলেছে।
ক্লেয়ার অবস্কুর: এক্সপেডিশন ৩৩
ফাইনাল ফ্যান্টাসি-স্টাইলের এই আরপিজিতে যেন লুভর জাদুঘরের পটভূমিতে এক বিপর্যস্ত পৃথিবীর গল্প বলা হয়েছে। একদল ফরাসি অভিযাত্রী এক রহস্যময় মহাদেশে পা রাখে, যেখানে বাস্তবতা আর কল্পনার সীমা মিলিয়ে গেছে।
মারিও কার্ট ওয়ার্ল্ড
নিন্টেন্ডো সুইচ ২-এ ফিরে এসেছে মারিও কার্ট, এবার সম্পূর্ণ নতুন রূপে। প্রতিটি রেসিং ট্র্যাক এখন যুক্ত হয়ে বিশাল এক মানচিত্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে আপনি স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারেন। আর হ্যাঁ, ডলফিনের মতো দেখতে মোটরবাইকে রেস করা যায়!
স্প্লিট ফিকশন
এক ভিন্নধর্মী দুই-খেলোয়াড়ের গেম, যেখানে এক ফ্যান্টাসি লেখক ও এক সায়েন্স ফিকশন লেখক নিজেদের গল্পের জগতে আটকে গিয়ে একত্রে মুক্তির পথ খোঁজেন। এটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মধ্যে বন্ধুত্ব আর মস্তিষ্কঘেঁষা চ্যালেঞ্জের দুর্দান্ত মিশেল।
দেসপেলোতে
এক ফুটবল গেম, কিন্তু এটি FIFA’র মতো নয়। ইকুয়েডরের ২০০২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পটভূমিতে নির্মিত এই গেমটি এক শৈশবের স্মৃতিগাথা ও খেলাধুলার আবেগঘন উপস্থাপন। এটি একাধারে হাস্যকর, আবেগপ্রবণ এবং অপূর্ব শিল্পশৈলীতে ভরপুর।
মনস্টার হান্টার ওয়াইল্ডস
বৃহদাকার দানব ও তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে কেন্দ্র করে তৈরি এই অ্যাকশন গেম খেলোয়াড়দেরকে ভয়, উত্তেজনা ও রোমাঞ্চে ডুবিয়ে দেয়। প্রতিটি লড়াই একটি যুদ্ধযাত্রার মতো।
লোনলি মাউন্টেনস: স্নো রাইডার্স
বরফঢাকা পর্বতে স্কিইং করার এই গেম দেখতে শান্তিপূর্ণ হলেও এর গেমপ্লে চ্যালেঞ্জিং। ভয়ঙ্কর ঢাল বেয়ে নেমে যাওয়ার অভিজ্ঞতা একদিকে রোমাঞ্চকর, অন্যদিকে দারুণভাবে তৃপ্তিদায়ক।
কিংডম কাম: ডেলিভারেন্স ২
১৫শ শতাব্দীর বোহেমিয়ার পটভূমিতে রচিত এই ঐতিহাসিক অ্যাডভেঞ্চারে রাজনীতি, যুদ্ধ, ষড়যন্ত্র আর বেঁচে থাকার লড়াইয়ের সমন্বয় রয়েছে। অনেকটা 'গেম অব থ্রোনস' ও 'হলি গ্রেইল'-এর সংমিশ্রণ মনে হতে পারে।
টু পয়েন্ট মিউজিয়াম
ডাইনোসরের হাড় কিংবা ভূতের ভয়ে কাঁপা জাদুঘর—এখানে সবই সম্ভব। এই কৌতুকপূর্ণ সিমুলেশন গেমে খেলোয়াড়কে জাদুঘরের কিউরেটর হিসেবে artefact সংগ্রহ, প্রদর্শনী তৈরি এবং দর্শনার্থীদের সামলাতে হয়।
এক্সপেলড!
ইঙ্কলের তৈরি এই রহস্য-ভিত্তিক গল্পভিত্তিক অ্যাডভেঞ্চার গেমে, আপনি একজন ছাত্রী যার ওপর স্কুলের সেরা ছাত্রীকে জানালার বাইরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজের নির্দোষিতা প্রমাণে আপনাকে করতে হবে গোয়েন্দাগিরি, গল্প আর সম্পর্কের জাল বুনন।
২০২৫ সাল এখনও পর্যন্ত গেমারদের জন্য এক রঙিন কল্পনার মেলা। আপনার প্রিয় গেম কোনটি? মন্তব্যে জানান!
শিহাব
