
ছবিঃ সংগৃহীত
চীন ও সার্বিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায় রচনা হলো সামরিক অঙ্গনে। দুই দেশের বিশেষ বাহিনী সম্প্রতি চীনের হেবেই প্রদেশে এক দশদিনব্যাপী যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে, যার নাম রাখা হয়েছে ‘পিস গার্ডিয়ান ২০২৫’। এটি ছিল চীন ও সার্বিয়ার প্রথম যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ—একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করছে।
১৯ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত চলা এই মহড়ায় দুই দেশের সেনারা একসঙ্গে নানা ধরনের কৌশলগত অনুশীলন করেছে। শহর ও গ্রামের অনুকরণে তৈরি পরিবেশে তারা অস্ত্রচালনা, কৌশলগত মুভমেন্ট, ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে—ড্রোন এবং স্বয়ংক্রিয় যান ব্যবহারের মাধ্যমে যুদ্ধ-প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করেছে। সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, “এই যৌথ প্রশিক্ষণ কেবল অভিজ্ঞতা বিনিময়ই নয়, বরং পারস্পরিক বোঝাপড়া, সমন্বয় ও বন্ধুত্ব গড়ারও বড় সুযোগ ছিল।”
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুচিচ চীনকে “সবচেয়ে মূল্যবান বন্ধু” বলে অভিহিত করেছেন। যদিও সার্বিয়া সামরিকভাবে নিরপেক্ষ দেশ, তারা দীর্ঘদিন ধরেই চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে। ড্রোন থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও তারা চীনের কাছ থেকে কিনেছে। এই ঘনিষ্ঠতা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে, কারণ সার্বিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ প্রত্যাশী এবং তাদের পররাষ্ট্রনীতি ইউরোপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
মহড়া শেষে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এই প্রশিক্ষণ শুধু সামরিক প্রস্তুতি নয়, বরং দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা ও মৈত্রীর এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।” সার্বিয়ার পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, "এটি আমাদের সেনাদের আন্তর্জাতিক পরিসরে কাজ করার দক্ষতা বাড়াবে এবং ভবিষ্যতের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তি আরও মজবুত করবে।"
এই মহড়া শুধু একটি কৌশলগত প্রশিক্ষণ ছিল না, বরং এর ভেতরে ছিল পারস্পরিক আস্থা, অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি এবং বিশ্বমঞ্চে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতির বার্তা। বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে, চীন ও সার্বিয়ার এই ঘনিষ্ঠতা ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছুই ইঙ্গিত দিতে পারে। এখন দেখার বিষয়—এই সম্পর্ক কোথায় গিয়ে পৌঁছায়।
মারিয়া