
ছবি: জনকন্ঠ
দীর্ঘদিন ধরে অপরাধ ও অবহেলার প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠা জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তঘেঁষা রামরামপুর গ্রাম এবার পরিচিত হচ্ছে একটি নতুন পরিচয়ে খেলাধুলাভিত্তিক সামাজিক জাগরণে।
এই গ্রামটি বাংলাদেশের একেবারে শেষপ্রান্তে, যেখানে মেঘালয়ের পাহাড় হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে আছে সীমানা। এতদিন নাম শুনলে মাথায় ভেসে উঠত চোরাচালান, সীমান্ত-অপরাধ কিংবা সামাজিক বঞ্চনার ছবি। কিন্তু এবার রামরামপুরের তরুণরা হাতে বল তুলে নিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে পথ বদলানো যায়।
সম্প্রতি গ্রামে আয়োজিত হলো এক আন্তঃপ্রজন্ম ফুটবল ম্যাচ, যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল একই গ্রামের দুই প্রজন্ম সিনিয়র বনাম জুনিয়র। খেলাটি ছিল প্রতিযোগিতামূলক, প্রাণবন্ত এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে আয়োজন করা। স্থানীয় একটি যুব সংগঠনের উদ্যোগে এবং গ্রামের সচেতন মহলের সহায়তায় চাঁদা তুলে সম্পূর্ণ আয়োজনটি সম্পন্ন হয়।
ম্যাচের শুরুতেই জুনিয়র দল প্রথম তিন মিনিটেই একটি গোল দিয়ে এগিয়ে যায়। পরে ২৪তম মিনিটে পেনাল্টির মাধ্যমে দ্বিতীয় গোল। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় সিনিয়ররা, তারা একটি গোল পরিশোধ করে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরায়। তবে শেষ পর্যায়ে জুনিয়ররা আরেকটি গোল করে ৩-১ ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে নেয়।
তবে জয়-পরাজয়ের বাইরে এই ম্যাচের সবচেয়ে বড় বার্তা ছিল একতা, সাহস আর নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্ন । খেলার পুরস্কার ছিল একটি খাসি, কিন্তু সেটা কাউকে এককভাবে দেওয়া হয়নি বরং খাসি দিয়ে রান্না করা হয় খিচুড়ি, আর সেই খিচুড়ি সবাই মিলে খায়, দল-মত নির্বিশেষে।
এ আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা বলেন, আমরা চাই আমাদের ছোট ভাইরা অপরাধ নয় বল আর বই হাতে করুক জীবন শুরু। আমরা আশাবাদী, এই ছোট উদ্যোগ একদিন বড় পরিবর্তনের পথ দেখাবে।
স্থানীয় তরুণ সমাজ জানায়, তারা চান রামরামপুরে একটি স্থায়ী খেলার মাঠ নির্মিত হোক, যেখানে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন হবে এবং তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠবে সুস্থ ধারায়, মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে।
Mily