
.
মাদারীপুরে পৌনে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের ৪ বছরেও একপাশে রাস্তা না থাকায় জনসাধারণের কোন কাজেই আসছে না। শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের যাতায়াতসহ কৃষি পণ্য আনা নেওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে ৬টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। মামলা জটিলতায় রাস্তা নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শীর্ঘই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানায় বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের এপ্রিলে মাদারীপুরের লক্ষ্মীগঞ্জের কুমার নদের উপর ৯৯ মিটার সেতু নির্মাণ শুরু করে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর এলজিইডি। ২০২১ সালের জুনে কাজের মেয়াদ শেষ হয়। সেতুটির দক্ষিনপাশে সংযোগ সড়ক ও রাস্তা থাকলেও উত্তর পাশে কোন রাস্তা নেই। এতে সরাসরি সেতুর সুফল পাচ্ছেন না পাঁচখোলা, রাস্তি, কালিকাপুরসহ অন্তত ৬টি ইউনিয়ন ও মাদারীপুর পৌরসভার একাংশের পথচারী, শিক্ষার্থী ও যাতায়াতকারীরা। স্থানীয়রা বালু দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করলেও বৃষ্টিতে বালু সরে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এতে দুর্ভোগ বড়েছে চলাচলকারীদের। দুর্ঘটনার শঙ্কায় আছেন পথচারী ও এলাকাবাসী। সেতুর উত্তর পাশে কোনো সড়ক না থাকায় রোগী নিয়ে অতিরিক্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ঘুরে হাসপাতালে আসায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। সেতুটির উত্তরপাশ থেকে রাস্তি ইউনিয়ন পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে আড়াই কোটি টাকার অনুমোদন দেয় সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর। একটি সেতু কয়েক হাজার মানুষের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন আনে। অথচ লক্ষ্মীগঞ্জের সেতুটির ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টো। এজন্য পরিকল্পনার অভাব আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। পথচারী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অসুস্থ মানুষ। এই সেতু দিয়ে কোনো যানবাহনে আসতে পারি না। পুরোটা কাঁচা রাস্তা হেঁটে আসতে হয়েছে। অথচ, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন সেতুটি আমাদের কোনো কাজে আসছে না।’ স্থানীয় বাসিন্দা খাদিজা বেগম বলেন, ‘এখানে সেতু নির্মাণ হয়েছে প্রায় ৫ বছর। অথচ যানবাহন চলাচলের কোনো ব্যবস্থা নেই। সাধারণ মানুষও চলাচল করতে পারে না। তাহলে এই সেতু আমাদের কি কাজে লাগবে?’ লক্ষ্মীগঞ্জের বাসিন্দা শাহাদাৎ হোসেন খান বলেন, ‘এখানে সেতু হয়েছে, তাহলে রাস্তাা কেন হচ্ছে না এমন প্রশ্ন এখানকার বাসিন্দাদের। আমরা দ্রুত রাস্তা চাই। যাতে রোগীসহ সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।’
এলজিইডির মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কীর্তনীয়া জানান, ‘সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হলেও মামলা জটিলতায় আটকে আছে কার্যক্রম। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
প্যানেল