ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভুয়া ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট সেজে ৬ বছরে ১২০টির বেশি ফ্রি ফ্লাইট!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ১২ জুন ২০২৫

ভুয়া ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট সেজে ৬ বছরে ১২০টির বেশি ফ্রি ফ্লাইট!

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ামি, ফ্লোরিডা থেকে একটি অবিশ্বাস্য প্রতারণার গল্প উঠে এসেছে সম্প্রতি। ৩৫ বছর বয়সী তিরন আলেকজান্ডার নামের এক ফ্লোরিডাবাসী ব্যক্তি গত ছয় বছর ধরে নিজেকে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট পরিচয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এয়ারলাইনের মাধ্যমে অন্তত ১২০টির বেশি ফ্রি ফ্লাইট করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ফ্লোরিডার ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি ফেডারেল জুরি তাকে ওয়্যার ফ্রড এবং ভুয়া পরিচয়ে বিমানবন্দরের সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

আদালতের নথি অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিরন আলেকজান্ডার American Airlines, Spirit Airlines, United Airlines, Delta Air Lines এবং Southwest Airlines-এর ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট পরিচয়ে ভুয়া কর্মী সনদ ও তথ্য ব্যবহার করে এসব এয়ারলাইনের জন্য সংরক্ষিত অভ্যন্তরীণ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতেন। এসব সাইটে এয়ারলাইনের প্রকৃত স্টাফদের জন্য ‘non-revenue travel’ সুবিধা থাকে, যার মাধ্যমে তারা বিনামূল্যে ফ্লাইটে যাতায়াত করতে পারেন।

আলেকজান্ডার এই বিশেষ সুবিধা কাজে লাগিয়ে একাধিকবার ভ্রমণ করেন। শুধু একটি এয়ারলাইনের নাম ব্যবহার করে তিনি ৩৪টি ফ্লাইট সম্পন্ন করেন এবং এতে তিনি প্রায় ৩০টি ভিন্ন ব্যাজ নম্বর ও ভুয়া নিয়োগ তারিখ ব্যবহার করেন। এছাড়াও, আরও তিনটি পৃথক এয়ারলাইনের ভুয়া স্টাফ পরিচয় দিয়েও তিনি ফ্লাইট বুক করেন। অথচ, তিনি কোনোদিনই কোনো এয়ারলাইনে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বা পাইলট হিসেবে চাকরি করেননি। আদালতের ভাষ্যমতে, তিনি ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে কোনো এক এয়ারলাইনের কর্মী হিসেবে কাজ করছেন বলে দাবি করতেন, যদিও বাস্তবে তার সেই ধরনের কোনো পদ ছিল না।

এই বিস্ময়কর প্রতারণার তদন্ত পরিচালনা করে মার্কিন পরিবহন নিরাপত্তা সংস্থা (TSA)। আলেকজান্ডারকে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠিত হয়। মামলাটি পরিচালনা করছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি মাইকেল সি. শেফার্ড, জ্যাকারি এ. কেলার ও আন্দ্রেস ই. চিনচিলা। আদালতের ঘোষণায় বলা হয়েছে, তিরন আলেকজান্ডারের সাজা আগামী ২৫ আগস্ট ঘোষণা করা হবে।

এ ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, প্রযুক্তি ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহারের মাধ্যমে কেউ চাইলে দীর্ঘদিন ধরে কীভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর গলিয়ে এমন প্রতারণা করতে পারে। এটি বিমান নিরাপত্তা ও এয়ারলাইনের ইন্টারনাল প্রটোকল নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলে। নিরাপত্তা জোরদার এবং কর্মী যাচাই প্রক্রিয়া আরও কঠোর করার দাবিও উঠেছে ইতোমধ্যে।

মুমু ২

×