
রোজকার মতোই ছিল দিনটি। আহমেদাবাদে অবস্থিত বিখ্যাত বিএম মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ক্যান্টিনে খাবার রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন শারলাবেন ঠাকোর। তার হাতের রুটি, সবজি আর গুজরাটি রান্না ছিল ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সেই খাবার পৌঁছে দিতেন তার ছেলে রবি ঠাকোর। কিন্তু এক মুহূর্তেই বদলে গেল সবকিছু। বৃহস্পতিবার দুপুরে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আছড়ে পড়ে ওই ক্যান্টিনের ওপর।
বিধ্বস্ত হওয়া সেই বিমানে ছিলেন না শারলাবেন, কিন্তু তিনি ছিলেন সেই ক্যান্টিনেই, নাতনি, মাত্র দুই বছরের আদ্যা ঠাকোরকে সঙ্গে নিয়ে। এখন দুজনেই নিখোঁজ।
রবি বলছেন, “১২ জুন আমাদের জন্য ছিল আরেকটা সাধারণ কর্মদিবস। দুপুর ১টার সময় আমি প্রতিদিনের মতো টিফিন পৌঁছাতে বের হই। ফিরে এসে জানতে পারি, ক্যান্টিনের ওপরেই বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। মা যেখানে বসে ছিলেন, সেখানে কিছুই নেই—সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”
আঁখি ভেজা কণ্ঠে রবি জানান, তিনি ইতিমধ্যে তার ডিএনএ নমুনা দিয়েছেন মেয়ে আদ্যার খোঁজে। পরিবারের অন্য সদস্য পায়েল ঠাকোর দিয়েছেন শারলাবেনের শনাক্তকরণে ডিএনএ।
পায়েল জানান, “মা গিয়েছিল ক্যান্টিনে, আর ফেরেনি। আমার ভাতিজিও ছিল সঙ্গে। আজ পর্যন্ত খোঁজ নেই। কোথায় খুঁজব ওদের? কেউ কিছু জানে না।”
বিমানটি ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার AI-171 ফ্লাইট, যা আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে যাত্রা করে দুপুর ১:৩৮ মিনিটে। কিন্তু মাত্র ৩২ সেকেন্ড পরই বিধ্বস্ত হয়। ২৪২ আরোহীর মধ্যে কেবল একজন যাত্রী ব্রিটিশ-ভারতীয় বিষ্বাশ কুমার রমেশ বেঁচে ফিরেছেন।
ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে সময় লাগবে আরও ৭২ ঘণ্টা। এদিকে শোকার্ত পরিবার খুঁজে ফিরছে তাদের হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের। রান্নাঘরে যেখান থেকে প্রতিদিন ভোরের খাবারের গন্ধ উঠত, আজ সেখানে শুধুই ধোঁয়া আর কান্না।
মিমিয়া