ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী মিল্লি: শতবর্ষের স্বাদে মুগ্ধ ভোজনরসিকেরা

প্রকাশিত: ১৩:০৫, ১২ জুন ২০২৫

জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী মিল্লি: শতবর্ষের স্বাদে মুগ্ধ ভোজনরসিকেরা

ছবি: সংগৃহীত

জামালপুর জেলার একটি অন্যতম জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের নাম মিল্লি বা পিঠালি। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই বিশেষ মাংসের তরকারিটি স্থানীয় গ্রাম-শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন চেহলাম, আকিকা কিংবা অন্যান্য সামাজিক আয়োজনে পরিবেশিত হয়ে আসছে। সাদা ভাতের সঙ্গে মিল্লির এই সুস্বাদু যুগলবন্দি আজও মানুষের পাতে বয়ে আনে অতুলনীয় স্বাদের অভিজ্ঞতা।

প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় পাওয়া যাচ্ছে এই খাবার। বিশেষ করে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নিরবিলি হোটেলে রয়েছে মিল্লির ব্যাপক চাহিদা। এখানকার মিল্লি রান্না হয় বিগত ২০-২৫ বছর ধরে। রান্নায় ব্যবহার হয় প্রায় ১২ থেকে ১৩ রকমের মসলা—আদা, রসুন, জিরা, দারচিনি, সাদা ও কালো গোলমরিচ, লবঙ্গ, তেজপাতা, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ ইত্যাদি। এসব মসলা একত্রে মিশে তৈরি করে অসাধারণ স্বাদের এই মিল্লি।

প্রতিদিন এখানে দুই থেকে তিন মণ গরুর মাংস দিয়ে মিল্লি রান্না হয়। ভোজনরসিকেরা প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন এই স্বাদ গ্রহণ করতে। কেউ আসছেন ময়মনসিংহ থেকে, কেউবা সিলেট থেকে। কেউ বলছেন—“আমি ঢাকায় মার্কেটিংয়ের চাকরি করি। মাসে এক-দুইবার আসতে হয় এখানে, আর এলেই মিল্লি খাওয়ার চেষ্টা করি।”

স্থানীয় এক ক্রেতা জানালেন, “এর আগে একবার খেয়েছিলাম, এতটাই সুস্বাদু লেগেছিল যে আবার চলে এসেছি।” আরেকজন বললেন, “আমরা মিল্লি খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করি, দেরি হলেও এই স্বাদ যেন মিস না হয়।”

নিরবিলি হোটেলের মালিক জানালেন, “আমরা লাভের চেয়ে মানুষের ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিই। দূরদূরান্ত থেকে যারা আসেন, তাদেরকে ভালোভাবে খাওয়ানোর চেষ্টা করি।”

শতবর্ষ ধরে টিকে থাকা এই খাবার এখন শুধু জামালপুরের নয়, গোটা দেশের ভোজনপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। জামালপুরের মিল্লি এখন এক স্বাদে, এক ঐতিহ্যে, এক বন্ধনে আবদ্ধ করে চলেছে সবাইকে।

আসিফ

×