ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

সঙ্গী হবে ঈদ আনন্দের

প্রস্তুত চিড়িয়াখানা জাদুঘর পার্ক বিনোদনকেন্দ্র  

জনকণ্ঠ ফিচার

প্রকাশিত: ২২:০৮, ১৫ জুন ২০২৪

প্রস্তুত চিড়িয়াখানা  জাদুঘর পার্ক  বিনোদনকেন্দ্র  

রাজধানীর শ্যামলীর ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের রাইডগুলো সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে

কোরবানির ঈদে বেশি ব্যস্ততা থাকে পশু নিয়েই। বিশেষ করে প্রথম দিনটি গরুর পেছনে ব্যয় করতে হয়। তবে দৃশ্যমান উদ্যাপন শুরু হয় দ্বিতীয় দিন থেকে। কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার হয়ে গেলে স্বাচ্ছন্দ্যে বাসা থেকে বের হয়ে আসতে থাকে মানুষ। রাজধানী ঢাকায় আত্মীয়-পরিজনের বাসায় বেড়ানো, দাওয়াত খাওয়া বা অন্যান্য সামাজিকতা কম হয়। বরং ফাঁকা শহরে ঘুরে বেড়াতেই বেশি দেখা যায়। চিড়িয়াখানা শিশু পার্ক জাদুঘরসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ভিড় বেড়ে সময় কয়েকগুণ হয়ে যায়। সিনেমা হল, কফিশপ সবই থাকে জমজমাট। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। বিষয়গুলো মাথায় রেখেই রাজধানীতে ঈদ উদ্যাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ঈদে বিনোদনপ্রেমীদের সবেচেয়ে বড় ভিড় পরিলক্ষিত হয় জাতীয় চিড়িয়াখানায়। শিশুরা তো বটেই, বড়রা বিভিন্ন প্রাণী দেখে আনন্দঘন সময় কাটান। এবারও বাঘ হাতি বানর আফ্রিকান সিংহ পেলিক্যান লামা বা ক্যাঙ্গারুর খাঁচার সামনে কৌতূহলী চোখে দাঁড়াবেন দর্শনার্থীরা।  চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, স্বাভাবিক ছুটির দিনে সেখানে প্রায় ৪০ হাজার দর্শনার্থী হয়। ঈদে সেটা বেড়ে লাখের কাছাকাছি হয়ে যায়। সে অনুযায়ীই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে চিড়িয়াখান কর্তৃপক্ষ। 

জাতীয় জাদুঘরেও ভিড় করবেন দর্শনার্থীরা। এবার আগের মতো ঈদের দিন বা তার পরের দিন জাদুঘর খোলা থাকবে না। জাদুঘরের ইতিহাস বিভাগের কীপার মনিরুল ইসলাম জানান, কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে এখন ঈদের মূল সময়টাতে জাদুঘর খোলা রাখা যাচ্ছে না। তবে ঈদের তৃতীয় দিন বুধবার দ্বার খুলে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার রুটিন বন্ধ। পরদিন থেকে নিয়মিতভাবে গ্যালারি খোলা থাকবে বলে জানান তিনি। ঈদের হাসি-আনন্দের সঙ্গী হবে শিশু পার্কগুলোও। অবশ্য এখন শাহবাগের মূল শিশু পার্কটি নেই। সংস্কার চলছে সেখানে। তাই শ্যামলীর শিশু মেলাই ভরসা। এই শিশুরাজ্যটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। আগারগাঁও, মিরপুর, মোহাম্মদপুর এলাকার শিশু-কিশোরদের প্রধানতম বিনোদনকেন্দ্রই বলা যায় এটিকে। ৪০টির মতো রাইড আছে এখানে। পরিবারের সকলের চড়ার মতো আছে ১২টি রাইড। বাকিগুলো শিশুদের। ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা রয়েছে শিশু মেলা।

পুরান ঢাকার মানুষের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠবে লালবাগের কেল্লা আহসান মঞ্জিল। ঈদে ঘুরে বেড়ানোর সুন্দর খোলামেলা জায়গা লালবাগ কেল্লা। মোগল আমলে নির্মিত দুর্গ দেখতে এবারও বহু মানুষ ভিড় করবেন। প্রতœ স্থাপনার পাশাপাশি এখানে রয়েছে সবুজ চত্বর ওয়াকওয়ে। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, ঈদের ছুটির দিনগুলোতে প্রতিদিন ১৬ হাজারের বেশি দর্শনার্থী আসেন এখানে। এবার সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

আহসান মঞ্জিল ঘিরেও কৌতূহলের শেষ নেই। পুরান ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত প্রাসাদটি অন্য অনেক স্থাপনা থেকে আলাদা। আকর্ষণীয়। ঈদে ঢাকার নবাবদের প্রাসাদ দেখতে অনেকেই সেখানে যাবেন। আহসান মঞ্জিল জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণ দিনগুলোতে এখানে দেড় ’  থেকে ৩শদর্শনার্থী আসেন। ঈদের ছুটিতে সেটি বেড়ে হয় হাজার  থেকে হাজার। 

ঢাকার আশপাশে হওয়ায় থিমপার্কগুলো নিয়েও আগ্রহ আছে মানুষের। আশুরিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডমে যাবেন অনেকেই। আনন্দঘন সময় কাটাবেন সেখানে। পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম। ওয়েভপুল, লেজি রিভার, টিউব øাইড, ওয়াটারপুলসহ বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দঘন সময় কাটাতে পারবেন দর্শনার্থীরা। অদূরে নন্দন পার্ক। বিশাল পার্কেও বিপুল দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের পর দিন সকাল থেকেই খোলা থাকবে পার্ক। ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ড্রাই পার্কের সব রাইড ঈদে চালু থাকবে।

ঈদে রাজধানীর জনপ্রিয় ফুডকোর্ট রেস্তোরাঁগুলো খোলা থাকবে। সিনেমা হলে মুক্তি পাবে নতুন ছবি। আধুনিক সিনেপ্লেক্সগুলোতে হলিউডের বিখ্যাত মুভি দেখানো হবে। এসবের বাইরে হাতিরঝিল, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান, মানিক মিয়া এভিনিউসহ খোলামেলা সব জায়গায় ঘুরে বেড়িয়ে ঈদ উদ্যাপন করবে রাজধানীবাসী।

×