পান্তা ইলিশ।
পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কথাটি মাথায় এলেই মুখ দিয়ে অকপটে বেরিয়ে আসে পান্তা-ইলিশের আহারবিলাস। প্রভাতে ইলিশ ভাজা, মরিচ পোড়া, বেগুন ভাজা, আলুভর্তা আর পান্তা ইলিশের ভোজ না হলে যেন বৈশাখের উদযাপনই ফিঁকে হয়ে আসে।
প্রথমত ইলিশ মাছ আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ। বাংলাদেশের জাতীয় মাছ হিসেবে ইলিশ ইতিমধ্যে ভৌগলিক নিবন্ধনও পেয়েছে। বিশ্বে উৎপাদিত ইলিশের ৭০-৭৫ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। দিনে দিনে এই ইলিশ উৎপাদন ক্রমাগত বাড়ছে। এজন্যই হতে পারে মাছে ভাতে বাঙালির ঐতিহ্য প্রকাশেই পান্তা ইলিশ রাখা হয় পাতে।একসময় ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে অনেক দোকান বসত। সেখানে পান্তা-ইলিশ খাওয়ানো হতো। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এসব দোকান দিত। নববর্ষ উদযাপনে পান্তা ইলিশ খেতেই হবে- এমনটা কোথাও দেখা যায়নি। তবে গ্রামের মানুষ এ সময় কাঁচা মরিচ সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ দিয়ে অথবা শুকনো মরিচ পুড়িয়ে পান্তা ভাত খায়। সেখানে ইলিশ থাকে না। সেখান থেকেই হয়তো বাঙালি পান্তা খাওয়ার চল এনেছে এই দিনে।
যদিও বৈশাখের সঙ্গে পান্তা-ইলিশের প্রচলনের ইতিহাস খুব দীর্ঘ নয়।আবহমানকাল থেকেই পহেলা বৈশাখ বাঙালি উদযাপন করে আসছে মেলা, হালখাতাসহ নানাভাবে। দিনটিতে ঘরে ঘরে ভালো খাবারের আয়োজনও নিয়মিত অনুষঙ্গ। তবে পান্তা কিংবা ইলিশ কখনোই পহেলা বৈশাখের অনুষঙ্গ ছিল না। এর প্রচলন নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে। দ্রুতই পান্তা-ইলিশ পহেলা বৈশাখের সমার্থক হয়ে ওঠে। কিন্তু, বৈশাখ অর্থাৎ এপ্রিল মাস জাটকা ইলিশের নদী থেকে সাগরে ফিরে যাওয়ার সময়। তাই জাটকা নিধন রোধে এসময় সরকারিভাবে ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ। তাই পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়ার ব্যাপারে মানুষকে নিরুৎসাহিত করার পক্ষে মৎসবিদসহ সংশ্লিষ্টরা।
টুম্পা