.
নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রবেশ পথ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোডের ব্যস্ততম তিনটি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নির্মিত তিনটি আন্ডারপাস বদলে দিয়েছে এসব এলাকার দৃশ্যপট। হারিয়ে গেছে যানজট। স্বস্তি পেয়েছে যাত্রী, যানবাহন চালক, শ্রমিক, পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ফতুল্লার শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক সময়ে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা যানজটের অস্বস্তিতে থাকত। বিগত ৩-৪ মাস ধরে যানজটের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বস্তিতে আছেন যাত্রী, পথচারী, যানবাহন চালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সওজ কর্তৃপক্ষের দাবি আনুমানিক সতেরো কোটি টাকা ব্যয়ে শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত হয়েছে তিনটি আন্ডারপাস।
ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডের আন্ডারপাসটি দেড় বছর, শিবু মার্কেট এলাকার আন্ডারপাসটি ৬ মাস ও জালকুড়ির আন্ডারপাসটি ৪ মাস আগে নির্মাণ শেষে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত আন্ডারপাস এলাকায় সরেজমিনে গেলে যানবাহন চালক, যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা এ প্রতিবেদকের কাছে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রবেশপথ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোডটি ৩৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চারলেন থেকে ছয়লেন সড়কে উন্নতিকরণ করে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত হয়েছে তিনটি আন্ডারপাস। ইতোমধ্যে তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণ শেষে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। খবর নিয়ে জানা যায়, এতদিন শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের বিড়ম্বনায় পড়তে হতো যাত্রীদের। এখন এ সব এলাকায় যানজট যেন হারিয়ে গেছে। আন্ডারপাসগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর থেকে এখানকার দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। নেই সেই চিরচেনা যানজট। নেই সেই ভোগান্তি। স্বস্তিতে যাত্রী, পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত অটো চালান সবিউর রহমান। তিনি বলেন, এক সময় এ সড়কের ফতুল্লার শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইঘর এলাকায় তীব্র যানজট অব্যাহত ছিল। এখন এ তিনটি স্থানে আন্ডারপাস ও পুরো সড়কটি উন্নয়ন কাজ করায় আর যানজট নেই। স্বস্তিতে যাত্রীরা। এ
সড়কটি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পেরে আনন্দিত যাত্রীরা। জালকুড়ি এলাকার সিএনজি চালক মো. রাজিব বলেন, এক সময়ে জালকুড়ি এলাকায় প্রতিদিন তীব্র যানজট অব্যাহত ছিল। ঘন্টার পর ঘন্টা এ বাসস্ট্যান্ডে এসে যানজটে আটকে থাকতে হতো যাত্রীদের। এখন জালকুড়িতে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। এটি উন্মুক্ত হওয়ার পর এখন আর এ স্থানে যানজট নেই।
এখানকার যানজট যেন হারিয়ে গেছে। আন্ডারপাসের নির্মাণ ও সড়কের উন্নয়নের কারণে এখানকার দৃশ্যপট বদলে গেছে। জালকুড়ি এলাকার দোকানী জাহিদ হোসেন বলেন, আন্ডারপাস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেক উপকার হয়েছে। এখন আর এখানে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে না। আন্ডারপাস হওয়াতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুটা কমেছে তাতে কি? এখানার যানজটতো কমেছে এটাই বড় স্বস্তি প্রকাশ করছি। ভূইঘর এলাকার দোকানি মো. হাসান বলেন, ভুঁইঘরে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। এতে এখানকার যানজট অনেকাংশে কমে এসেছে। ভুঁইঘরের রূপায়ন টাউনের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডে একটি আন্ডারপাস যানজট কমিয়ে দিয়েছে। কারণে এখন আর ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার না হয়ে পথচারীরা আন্ডারপাস দিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন। যানবাহনও আন্ডারপাস দিয়ে ঘুরে চলে যাচ্ছে। এতে যানবাহন ও যাত্রীদের চলাচলে অনেকটাই স্বস্তি ফিরে এসেছে। দেলপাড়ার বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, এ সড়কের তিনটি স্থানে নির্মিত আন্ডারপাস অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে যাত্রীদের। জালকুড়ি তালতলার বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন বলেন, এখন আর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কটি বিড়ম্বনার সড়ক নেই। এখন এ সড়কে আন্ডারপাস ও সড়কের প্রশস্ততা অনেকটাই বদলে দিয়েছে এখানকার দৃশ্যপট। নেই যানজট। শিবু মার্কেট এলাকার দোকানি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখানে আন্ডারপাস চালু হওয়ার পর থেকে আর যানজট সৃষ্টি হচ্ছে না।
আগে এখানকার যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী হিসেবেই থাকত। সস্তাপুর এলাকার বাসিন্দা আইয়ুব হোসেন বলেন, শিবু মার্কেট এলাকার আন্ডারপাস আমাদের চলাচলে অনেক উপকার হয়েছে। নির্বিঘেœ আমরা যানজটমুক্ত পরিবেশে চলাচল করতে পারছি। এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এমপিসহ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই (প্রাশসন) শেখ মো. আব্দুল করিম বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের গাড়িগুলো কোথাও থামতে হচ্ছে না। রাস্তাটির প্রশস্ততা বেড়েছে ও রাস্তাটি খুবই উন্নত হয়েছে। ক্রসিংয়ের গাড়িগুলো আন্ডারপাস দিয়ে চলে যাচ্ছে। ক্রসিংয়ের কারণে মেইন সড়কের গাড়িগুলোকে বন্ধ থাকছে না। ভবিষ্যতে ৫০ বছরেও যানজটের সম্ভাবনা কম। এটার কৃতিত্ব আমাদের নয়। সড়কটি উন্নয়ন হওয়ার কারণে এটি হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নূরে আলম বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোডটি ৩৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চারলেন থেকে ছয়লেন সড়কে উন্নতি করে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
এর মধ্যে আনুমানিক সতেরো কোটি টাকা ব্যয়ে শিবু মার্কেট, জালকুড়ি ও ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত হয়েছে তিনটি আন্ডারপাস। এ প্রকল্পটির শেষ ধাপের কাজ চলছে। ভুঁইঘর বাসস্ট্যান্ডের আন্ডারপাসটি দেড় বছর, শিবু মার্কেট এলাকার আন্ডারপাসটি ৬ মাস ও জালকুড়ির আন্ডারপাসটি ৪ মাস আগে নির্মাণ শেষে উন্মক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ভুঁইঘরের আন্ডারপাসটি তিন মিটার ও শিবু মার্কেট ও জালকুড়ির আন্ডারপাসটি পাঁচ মিটার করে উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। তিনিও দাবি করেন এ আন্ডারপাস চালু হওয়ার পর থেকে এখানে আর যানজট নেই।
