ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

​​​​​​​গোপীবাগের রোজ গার্ডেন পাশে

দীর্ঘদিন ধরেই দুই সড়কের বেহাল অবস্থা

​​​​​​​ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

প্রকাশিত: ২০:১১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দীর্ঘদিন ধরেই দুই সড়কের বেহাল অবস্থা

গোপীবাগের কে এম দাস লেনের একি হাল

রাজধানীর গোপীবাগ আর কে মিশন রোড। ছোট্ট একটি এলাকা। এখানেই রয়েছে প্রাচীন ঐতিহ্য রোজ গার্ডেন। আশপাশে রয়েছে কামরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুল, শহীদ নবী উচ্চ বিদ্যালয় সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এই এলাকার ছোট্ট দুটি রাস্তা দীর্ঘদিন যাবৎ বেহাল অবস্থা। সড়ক দুটি দেখলে মনে হয় না, এটা কোনো রাজধানীর সড়ক।

আধা কিলোমিটারের চেয়েও কম দূরত্বের রাস্তা দুটি পুরো অংশের কোথাও আস্ত ইটের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সড়ক দুটির বিভিন্ন স্থানে কাদা-মাটির একাকার অবস্থা। সড়কটি কার্পেটিং, পাথর, সুরকি উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করার কারণে রাস্তাটি এখন মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কটি বর্ষায় পানি জমে, শুকনায় ধুলা ওড়ে বলে স্থানীয়রা জানান।

সড়কটির বিষয়ে গোপীবাগের ৪৮/১২ নম্বর বাড়ির সামনে কথা হয় আব্দুর রাজ্জাক নামের এক স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘ সাত বছর যাবৎ রাস্তাটির এই অবস্থা। কত নেতা দেখলাম কেউ সড়কটি ঠিক করতে পারে না। সবাই শুধু আশ্বা দেয়। কিন্তু রাস্তা দিন দিন খারাপ হয়। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রতিদিন আশপাশের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করে পথে। বৃষ্টির সময় সড়কে হাঁটু পানি জমে। প্রায় রিক্সা গাড়ি গর্তে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে কিন্তু দেখার কেউ নেই। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

সরেজমিনে গোপীবাগ এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পুরান ঢাকার গোপীবাগের আশপাশের সবগুলো সড়কেই ভালো। শুধু হুমায়ুন সাহেবের বাড়ির পাশে আর কে মিশন রোড এবং কে এম দাস লেনের সংযোগ সড়কটি বেহাল অবস্থা। আধা কিলোমিটার কম দূরত্বের সড়ক বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং, পাথর, সুরকি উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করার কারণে রাস্তাটি এখন মাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। সড়কটি বিভিন্ন স্থানে ভাঙাচোরা খানাখন্দের কারণে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তে পানি জমে থাকায় যানবাহন পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। তাই সাধারণ রিক্সা অন্যান্য যানবাহন এই সড়কে আসতে চায় না বলে স্থানীয়রা জানান।

রহিম মিয়া নামের এক রিক্সাচালক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবৎ এই সড়কটি খারাপ অবস্থা। যাত্রী নিয়ে এই সড়কে আসলেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাই এদিকে সাধারণ রিক্সাচালকরা আসতে চায় না। যদি কোনো যাত্রী বেশি জোরাজোরি করে তাকে ভাড়া বাড়িয়ে নেওয়া হয়। কারণ  আসলেই দুর্ঘটনা ঘটে। বৃষ্টি হলে সড়কে প্রায় হাঁটু পানি জমে যায়। তখন প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে।

গিয়াস উদ্দীন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জনকণ্ঠকে বলেন, ‘সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা দুটির সংযোগস্থলে পানি জমে যায়। খানাখন্দে ভরে ওঠে নোংরা পানি একাকার অবস্থা তৈরি হয় সড়কে। মাঝারি বৃষ্টিপাতে হাঁটুসমান পানি জমে একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ভারি বৃষ্টি হলে নৌকায় যাতায়াতের উপক্রম ঘটে। ফলে যানবাহন, পথচারী, নারী শিশুদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সড়ক সংস্কারে একাধিকবার ৩৯ নং ওয়ার্ড কমিশনারের কাছে আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই সড়ক দ্রুত সংস্কারের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে দাবি জানান তিনি।

বিষয়ে ডিএসসিসির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোকন উদ্দীন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে মেয়রের কাছে ফাইল পাঠানো হয়েছে। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু হবে। ড্রেন সংস্কারের পাইপ বসানোসহ পুরো সড়কটি মেরামত করা হবে। ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দা ভবন নির্মাণের সময় বড় বড় ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতা চান তিনি।