
কুষ্টিয়ার মিলপাড়ায় রয়েছে নেপালিপাড়া নামে এক এলাকা। সেখানে বসবাস করছেন প্রায় ২০টি পরিবার। তারা নেপালের সংস্কৃতি ধারণ করলেও কথা বলেন বাংলায়। স্থানীয়দের কাছে বেশ পরিচিত এ এলাকাটি।
সরেজমিনে জানা যায়, ১৯০৮ সালে মোহিনী মিলস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে নেপাল থেকে আনা হয় কয়েকশ’ প্রহরী, যারা ছিলেন দুর্দান্ত সাহসী, শক্তিশালী, প্রশিক্ষিত ও বিশ্বস্ত। তাদের বসবাসের জন্য মিলের ২ নম্বর গেটের সামনেই স্থাপন করা হয় একটি কলোনি। কিন্তু কালের বিবর্তনে মোহিনী মিলসটি বন্ধ হওয়ার কারণে অনেকেই ফিরে যান নিজ দেশে। তবে থেকে যায় কয়েকটি পরিবার। মিল বন্ধ হয়েছে বহু বছর আগে। তবে সেই 'নেপালিপাড়া' নামে খ্যাত কলোনিটি এখনও আছে। এই কলোনিতে প্রায় ৫০টি নেপালি পরিবার এখনও বসবাস করছেন। তারা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক; তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন বাংলাদেশের পরিচয় বহন করে। নেপালিরা এখন মনেপ্রাণে বাংলাদেশি। এই পল্লীর মানুষগুলো খেলাধুলায় পারদর্শী, শিক্ষিত, সবল এবং ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে জড়িত রয়েছেন।
এ বিষয়ে নেপালি বাসিন্দারা বলেন, মোহিনী মিলসে কাজ করার জন্য নেপাল থেকে তারা বহু বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। বর্তমানে মোহিনী মিলস বন্ধ থাকায় তারা আর নেপালে ফিরে যাননি। নেপালে অনেক পূর্বপুরুষ থাকলেও তারা যেতে পারেননি। কারণ, তারা এখন বাংলাদেশি হয়ে কষ্টের মধ্য দিয়েই বসবাস করছেন। তাদের সন্তানেরা এখন বাংলা ভাষায় কথা বলে, পড়ে স্কুল-কলেজেও। এখানকার স্থানীয়দের সঙ্গে কোনো ভেদাভেদ নেই, সকলে মিলে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন। এ কারণে এখন তাদের বাংলাদেশের বাইরে ভালো লাগে না।
এখানকার স্থানীয়রা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যেমন বাংলায় কথা বলেন, এখানকার নেপালিরাও বাংলায় কথা বলেন। তাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই। সবার সাথে ভালো ব্যবহার করেন এবং অনেক সুন্দরভাবে কথাবার্তা বলেন।
সানজানা