
শিল্পকলায় শিশু-কিশোর নাট্য দিবসের অনুষ্ঠানে শিশু শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা
নাচ, গান কিংবা নাট্য প্রদর্শনী-সবটাই যেন বড়দের জন্য। রাজধানীতে বছরজুড়ে নানা অনুষ্ঠান হলেও ছোটদের জন্য নিয়মিত অনুষ্ঠানের বড্ড অভাব। অজ¯্র আয়োজন বা অনুষ্ঠান হলেও সেসবে ভাবা হয় না সোনামনিদের কথা। তাদের মানসিক বিকাশ বা বিনোদনের চিন্তা বিবেচনায় নেওয়া হয় না। এমন বাস্তবতায় শিশুদের জন্য বর্ণিল এক আয়োজন অনুষ্ঠিত হলো সোমবার। এদিন উদ্্যাপিত হলো বিশ্ব শিশু-কিশোর ও যুব নাট্য দিবস। দিনব্যাপী ছিল নানা কর্মসূচি।
সেসব কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো সেমিনার। বর্ণিল প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে তারা বের করে আনন্দ শোভাযাত্রা। বিকেল গড়ানো সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছে নাচ-গানে সজ্জিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আর দিবসটি উদ্্যাপনে রং ছড়ানো এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন। সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। বসন্ত বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার হলে স্কুল ক্ষিার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর ও যুব নাট্য চর্চার সংকট ও সম্ভাবনা শিরোনামের সেমিনার।
এতে খুদে বক্তারা ছোটদের নাট্যচর্চায় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সমান্তরালের সম্ভাবনার কথা মেলে ধরেন। সেমিনার শেষে একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে শিশুরা বেরিয়ে আসে সড়কে। উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনায় অংশ নেয় বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রায়। পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর নেতৃত্বে শতাধিক শিশুর কলরবে মুখরিত শোভাযাত্রাটি একাডেমির চারপাশের সড়ক ঘুরে পুনরায় ফিরে আসে একাডেমি প্রাঙ্গণে। এর পর সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা অনুষ্ঠান।
আলোচনা শেষে ছিল কবিতার শিল্পীত উচ্চারণসহ গানের সুর ও নাচের নান্দনিকতায় সজ্জিত বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে উপস্থাপিত হয় পিপলস থিয়েটার, শিল্পকলা একাডেমি, বন্ধু মহল, কল্পরেখা, স্বদেশ নাট্যাঙ্গন ও বাংলা নাট্যমের পরিবেশনা। সঙ্গে ছিল শরীরী কসরতের মনোমুগ্ধকর অ্যাক্রোবেটিক শো। শুরুতেই মঞ্চে আসেম একঝাঁক খুদে গাইয়ে। অনেকগুলো কণ্ঠ মিলে যায় এক সুরে। সকলে মিলে গেয়ে শোনায়Ñ আমরা সবাই কুঁড়ি/নট নন্দনে ফুটব ...।
এর পর দলটি মৌলবাদের তৎপরতা রুখে দেওয়ার প্রত্যয়ে গেয়ে শোনায়Ñ এ মাটি নয় জঙ্গিবাদের/ এ মাটি মানবতার ...। একাডেমির নৃত্যদল পরিবেশন করে ‘বীর পুরুষ’ শীর্ষক। সমবেত আবৃত্তি পরিবেশন করে কল্পরেখার বাচিকশিল্পীরা। গাজীপুরের বন্ধু মহল উপস্থাপন করে সমবেত নৃত্য। নৌকা বাইচের গান শুনিয়েছে রাজবাড়ীর স্বদেশ নাট্যাঙ্গন। নাচ-গানের সমন্বিত কোরিওগ্রাফি উপস্থাপন করে নরসিংদীর বাংলা নাট্যম। আজ যত যুদ্ধবাজ শিরোনামের নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীবৃন্দ। একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক দল পরিবেশন করে ক্যাপ ডান্স, দিয়াবো, হাঁড়ি লাঠি ও রিং ডান্স। সবশেষে পরিবেশিত হয় চলো বাংলাদেশ শিরোনামের সমবেত নৃত্য।