
.নিজ পেয়ারা বাগানে হযরত আলী
বলছি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের ফকিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা হযরত আলীর কথা। তিনি একজন সফল চাষী ও উদ্যোক্তা। পেয়ারা চাষ করে এক অনন্য সফলতার নজির সৃষ্টি করেছেন ৪৮ বছরের এই হযরত আলী। পেয়ারা চাষ করে তিনি আজ স্বাবলম্বী। বদলে গেছে তাঁর ভগ্যের চাকা। ক’বছর আগে মাত্র দুই লাখ টাকার পুঁজি নিয়ে তিনি ৫ বিঘা জমিতে শুরু করেন পেয়ারা চাষ। বর্তমানে তাঁর ৬০ জমিতে রয়েছে পেয়ারার আবাদ। চার ছেলে ও মেয়ের জনক হযরত আলী তাঁর বাগান থেকে বর্তমানে প্রতিমাসে বিক্রি করছেন ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার পেয়ারা। এ থেকে মাসে তিনি খরচ বাদে আয় করছেন আনুমানিক দেড় লাখ টাকা। শুধু পেয়ারা বিক্রি করে তিনি আজ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও সচ্ছলতার পাশাপাশি তাঁর পেয়ারা বাগানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন অন্তত ২০ জন শ্রমিকের। হযরত আলীর এখন নতুন বাড়ি, ঘরে সোফাসেটসহ দামী আসবাবপত্র, টিভি, স্যানিটেশন বাথরুম ও মাঠে জমি সবই রয়েছে। অথচ সেদিনের কথা, মাত্র ৮/১০ বছর আগেও এর সব কিছুই ছিল তাঁর কাছে আকাশ কুসুম কল্পনা। হযরত আলীকে অনুকরণ করে আজ এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। তারাও শুরু করছেন পেয়ারার আবাদ।
ভেড়ামারার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের দুর্গাতলা পরানখালী গ্রামের মাঠেই রয়েছে হযরত আলীর বিশাল পেয়ারা বাগান। গত ১১ সেপ্টেম্বর সরেজমিন ঘুরে এলাম এই বাগান। বিশাল এ বাগানে ঢুকলেই যেন পথ হারিয়ে ফেলার অবস্থা। একজন সফল পেয়ারা চাষী ও উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনে হযরত আলীর গল্পটিও বেশ চমৎকার। বাগানেই কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, এর আগে কলার ব্যবসায়ী ছিলেন নারায়ণগঞ্জের আড়তে কলা বিক্রি করতেন। একদিন তিনি খেয়াল করেন আড়তে এক কার্টুন পেয়ারা আসতেই তা কেনার জন্য ক্রেতাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি। এক পর্যায়ে ওই পেয়ারা নিলমে ১১০ টাকা পর্যন্ত কেজি দর ওঠে এবং সঙ্গে সঙ্গেই তা বিক্রি হয়ে যায়। এটি ছিল ২০১৩ সালের কথা। এ থেকেই হযরত আলী পেয়ারা চাষের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এরপর তিনি এলাকায় ফিরে অন্যদের বাগানে ঘুরে ঘুরে পেয়ারা চাষের ধরন ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের চেষ্টা করেন। কিছুটা অভিজ্ঞতা নেয়ার পর ২০১৪ সালে তিনি নিজেই জুনিয়াদহ ইউনিয়নের দুর্গাতলা পরানখালী মাঠে আনুমানিক দুই লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে প্রথম পেয়ারা চাষ শুরু করেন। এমএ রকিব, কুষ্টিয়া