ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষকদের

প্রকাশিত: ২১:৫০, ২ ডিসেম্বর ২০২১

কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষকদের

ষ্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস॥ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রোভোষ্ট সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন দাবীতে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা। এদিকে শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির দুই জন কমিটিতে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন বলে জানান কুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন। সমাবেশে শিক্ষরা বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিবেশ চাই। যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিরাপদে সহবস্থান করাসহ নির্বিঘ্নে পদচারণা করতে পারে। বক্তারা বলেন, শিক্ষক সেলিমের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। সম্ভাবনাময় প্রতিভাবান এ শিক্ষককে মানসিক নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সমাবেশে শিক্ষকরা আরও বলেন, এ ধরনের মানষিক নির্যাতনকারীদের মুল উৎপাটন করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে ক্যাম্পাস সকলের জন্য নিরাপদ হয়। শিক্ষকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক সেলিমের সমূদয় পাওনার বাইরে তার (সেলিমের) পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবী জানান। এছাড়া শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাসে যাবে না বলে সমাবেশে ঘোষণা দেয়া হয়। সকালে সাড়ে ১০টায় শিক্ষক সমিতির আহবানে শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমবেত হন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এরপর বেলা সোয়া ১১টায় শিক্ষকরা প্রতিবাদ রালি বের করেন। শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় কুয়েট ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস। বক্তৃতা করেন প্রফেসর ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. মো সাইফুর রহমান খান, প্রফেসর ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার, প্রফেসর ড. মোস্তফা সরোয়ার, পল্লব কুমার চৌধুরী, প্রফেসর ড.রাফিজুল ইসলাম. কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসর ড. পিন্টু চন্দ্র শীল, ম্যাকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং প্রফেসর ড. সোবহন মিয়া, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. সজল কুমার অধিকারী. ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের ড. মোহাম্মদ আলমগীর প্রমুখ। উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. মোঃ সেলিম হোসেন গত ৩০ নবেম্বর বেলা ৩টায় ইন্তেকাল করেন। এর পর অভিযোগ ওঠে কুয়েট ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার লোকজন নিয়ে ওই দিন ড. মোঃ সেলিমের দাফতরিক কক্ষে প্রবেশ করে অশালীন আচরণ ও মানষিক নির্যাতন করেন। তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচন করার জন্য আগে থেকেই প্রভোষ্ট ড. সেলিম হোসেনকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরকম পরিস্থিতিতে ৩০ নবেম্বর বাসায় ফেরার পর বেলা ২টার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে তিনি দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন এবং খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
×