ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে তৃতীয় ধাপে ২১ ইউপির নির্বাচন ॥ বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্রদের চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকা

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ২৫ নভেম্বর ২০২১

শেরপুরে তৃতীয় ধাপে ২১ ইউপির নির্বাচন ॥ বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্রদের চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকা

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ আগামী ২৮ নবেম্বর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। তবে চেয়ারম্যান পদে এ নির্বাচন হবে ১৯টি ইউনিয়নে। এ নির্বাচনে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীসহ স্বতন্ত্ররা। কয়েকটি ইউনিয়নে লড়ছেন বিএনপি ঘরানার প্রার্থীও। এ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে উত্তেজনা। অন্যদিকে নির্বাচন নির্বিঘœ ও সুষ্ঠু করতে ইতোমধ্যে উভয় উপজেলায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ নির্বাচন অফিসের উদ্যোগে পৃথক পৃথকভাবে হয়েছে মতবিনিময় সভা। তবে এবার বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভারে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই জয়-পরাজয়ের প্রশ্নে কঠিন সমীকরণে বা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে নৌকা- এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। জানা যায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ইতোমধ্যেই নন্নী ইউনিয়নে বিল্লাল হোসেন চৌধুরী ও রামচন্দ্রকুড়া-ম-লিয়াপাড়া ইউনিয়নে আমানুল্লাহ বাদশা আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে চেয়ারম্যান পদে এখন ১০ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বন্দনা চাম্বুগং। তার সাথে লড়ছেন বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আজাদ মিয়া (মোটরসাইকেল) ও মাওলানা জামাল উদ্দিন (চশমা)সহ ৩ জন। এবার ২ জন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বন্দনার পক্ষে দলের স্থানীয় লোকজন অনেকটাই কমে এসেছে। ফলে নৌকার জয়-পরাজয়ের সমীকরণ কঠিন হয়ে উঠেছে। রাজনগর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বিপ্লব কুমার বর্মন। তার সাথে লড়ছেন সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান (ঘোড়া), স্বতন্ত্র প্রার্থী সেকান্দর আলী (আনারস) ও অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আতিউল্লাহ (চশমা)। নয়াবিল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন নূর ইসলাম। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী লতিফুল ইসলাম বকুল (আনারস) ও বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান (মোটরসাইকেল)। কাকরকান্দি ইউনিয়নে এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদউল্লাহ তালুকদার মুকুল। এবার তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী তরুণ নেতা নিয়ামুল কাউসার। নালিতাবাড়ী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মাস্টার। এ ইউনিয়নে তার সাথে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক (চশমা) ও রেজাউল করিম (মোটরসাইকেল)। রূপনারায়নকুড়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুঞ্জুর আল মামুন (ঘোড়া)। মরিচপুরান ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার শফিকুল ইসলাম। তার সাথে লড়ছেন সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আইয়ুব আলী সরকার (চশমা), জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার (ঘোড়া) ও নজরুল ইসলাম (আনারস)। যোগানিয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আব্দুল লতিফ। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিদ্রোহী প্রার্থী তাকিজুল ইসলাম তারা (ঘোড়া)। বাঘবেড় ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে এবারও লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর। তার সাথে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হাফিজুর রহমান খোকন (মোটরসাইকেল) ও সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম (আনারস)। কলসপাড় ইউনিয়নে এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেম। তার সাথে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ফকর উদ্দিন নয়ন (মোটরসাইকেল), স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদ (আনারস) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শরফুজ্জামান শরাফত (টেলিফোন)। আর নকলা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৫, সংরক্ষিত ৮৯ এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৮৬ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে গণপদ্দী ইউনিয়নে এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শামছুর রহমান। তার সাথে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক মো. আমীর হামজা (মোটর সাইকেল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামাল মিয়া (আনারস)। নকলা ইউনিয়নে এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান সুজা। তার সাথে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আবু বকর ছিদ্দিক (মোটর সাইকেল) ও মো. আব্দুল হালিম (ঘোড়া)। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন মো. মুরাদুজ্জামান (আনারস)। উরফা ইউনিয়নে এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মুহাম্মদ রেজাউল হক হীরা। এবারও তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মুহাম্মদ নুরে আলম (চশমা)। গৌড়দ্বার ইউনিয়নে এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শওকত হুসেন খান। তার সাথে লড়ছেন দলের ৩ বিদ্রোহী প্রাথী মো. হামিদুল ইসলাম (ঘোড়া), খন্দকার রবিউল করিম (আনারস) ও মো. মনির খান (মোটর সাইকেল) এবং জাপা প্রার্থী খন্দকার ইলিয়াস হোসেন (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোবারক হোসেন (চশমা)। বানেশ্বর্দী ইউনিয়নে এবার প্রথমবারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আঞ্জুমান আরা বেগম রুমী। তার সাথে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মাজহারুল আনোয়ার (আনারস), স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার জাকির হোসেন (চশমা) ও মো. সহিদুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. শরীয়ত উল্লাহ (হাতপাখা)। পাঠাকাটা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মো. আব্দুস ছালাম। তার সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন মো. মোবারক হোসেন (আনারস) মো. আব্দুল হক (চশমা) ও মো. মোজাম্মেল হক ফকির (মোটর সাইকেল) এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. মোবারক হোসেন (হাতপাখা)। টালকী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মো. বদরুজ্জামান। তার সাথে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম (টেলিফোন), মো. সায়েদুল হক (আনারস) ও এসএম খোরশেদ আলম (চশমা)। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন মো. জহিরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) ও মোজাফফর মহিউদ্দিন (ঘোড়া)। চরঅষ্টধর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম রব্বানী। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন মো. শাহজাহান (আনারস)। চন্দ্রকোনা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সাজু সাইদ ছিদ্দিকী। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান (আনারস)।
×