অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ স্থায়ী টেকসই উন্নয়ন বা এসডিসি অর্জনে আবার জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, করোনার এই সময়েও বাংলাদেশ শীর্ষ ৫টি সহনশীল দেশের তালিতায় রয়েছে। এই সক্ষমতা ধরে রাখতে হলে জাতিসংঘের সাহায্য প্রয়োজন।
রবিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে দ্য ইউনাইটেড নেশনস সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক (ইউএনএসডিসিএফ) ২০২২-২০২৬ প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় -এর উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ভার্চুয়ালী অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকেন। এছাড়া উদ্বোধনী বক্তব্য দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিজ্ ফাতিমা ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ্ মিয়া সেপ্পো।
ওই সময় আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবনের স্বপ্ন ছিল একটি দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
জাতির পিতার সেই অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে করোনা পূর্ববর্তী গত এক দশক দেশে গড়ে ৭.৪ শতাংশ অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এমনকি অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ মহামারী কালে গত বছর যেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ ভাগ সংকুচিত হয়েছে।
এমন ক্রান্তিকালেও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভার টেকসই উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২১-এ উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসডিজি প্রগ্রেস অ্যায়ার্ডে ভূষিত করেছে।
স্বাধীনতার লগ্ন থেকেই জাতিসংঘ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ও বিশ্বস্ত অংশীদার এবং আমাদের সার্বিক উন্নয়ন অর্জনে এই সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে আবারও গতি অর্জনে এই ফ্রেমওয়ার্ক ভূমিকা রাখবে।
জাতিসংঘ বাংলাদেশকে তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহযোগী হিসাবে পূর্বের ন্যায় কাজ করবে বলে অর্থমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়ের উপর জোর দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণ করতে চলেছি।
২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য অর্জন এবং এই উন্নয়নের সুবিধাসমূহ যেন সবাই সমানভাবে পায়, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীগুলোর জীবনে বাস্তব ও টেকসই পরিবর্তন আনার লক্ষ্য অর্জনে এই ফ্রেমওয়ার্ক কাজ করবে। বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ্ মিয়া সেপ্পো তাঁর বক্তব্যে এই কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নে সরকার ও অংশীদারদের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা, প্রতিটা শিশুর জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পরিবার দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশ সরকারের থাকবে মর্মে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
