ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ছয় মাসে সাড়ে ৭ টন স্বর্ণ এসেছে

প্রকাশিত: ০১:০১, ২৩ অক্টোবর ২০২১

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ছয় মাসে সাড়ে ৭ টন স্বর্ণ এসেছে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে এ বছরের ছয়মাসে বৈধভাবে স্বর্ণ এসেছে প্রায় সাড়ে ৭ টন। এতে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ১১৫ কোটি টাকা। একইসঙ্গে কমেছে অবৈধভাবে স্বর্ণের চালান আসার ঘটনাও। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও বিমানবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য মতে, গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয়মাসের মধ্যে মাঝে তিনমাস করোনার কারণে ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ ছিল। বাকি ছয়মাসে স্বর্ণ এসেছে ৬ হাজার ৮শ’ কেজি। অক্টোবর মাসের প্রথম বিশদিনে এসেছে আরও প্রায় ৭শ’ কেজি স্বর্ণ। মূলত দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে এ স্বর্ণগুলো এসেছে। এনেছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা, যারা সেখানে চাকরি ও ব্যবসা করে থাকেন। এছাড়াও সাধারণ যাত্রীরা এ আইনের আওতায় নির্ধারিত পরিমাণে স্বর্ণ আনতে পারছেন। এতে করে কাস্টমসের রাজস্ব আয় হচ্ছে। সূত্র মতে, করোনাকালীন তিনমাস বাদ দিয়ে গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল এবং আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে এসেছে ৫০ হাজার ৭৭৪টি স্বর্ণবার, যার ওজন প্রায় ৬ হাজার ৮শ’ কেজি। এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ১০২ কোটি টাকা। এরপর অক্টোবর মাসের প্রথম বিশদিনে এসেছে ৫ হাজার ৮৮৩টি স্বর্ণবার, যার ওজন প্রায় ৭৮৮ কেজি। এর মাধ্যমে রাজস্ব এসেছে প্রায় ১২ কোটি টাকা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ আসে গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে। এ দু’মাসে বিমানবন্দর দিয়ে স্বর্ণ এসেছে ২ হাজার ৯৭৪ কেজি অর্থাৎ প্রায় ৩ টন। আগের দু’মাস অর্থাৎ জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে স্বর্ণ এসেছে ২ হাজার ৬৪৩ কেজি অর্থাৎ আড়াই টনের বেশি। করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর আগস্ট মাস থেকে শুরু হয় ফের ফ্লাইট অপারেশন। এ মাসে ১০০ কেজি স্বর্ণ আমদানি হয়। সেপ্টেম্বর মাসে আসে ১ হাজার ১১৪ কেজি স্বর্ণ। বছরের মাঝামাঝি মে, জুন ও জুলাই মাসে বিমান চলাচল করোনার কারণে বন্ধ ছিল। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, ব্যাগেজ রুলের আওতায় স্বর্ণ আনার অনুমতি রয়েছে। প্রতি যাত্রী বৈধভাবে সর্বোচ্চ দুটি করে স্বর্ণবার আনতে পারেন। প্রতি পিসের জন্য প্রতি তোলায় ২ হাজার টাকা করে শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। সাধারণত ১০ তোলার একটি স্বর্ণবারের শুল্ক আসে ২০ হাজার টাকা। বারের ওজন বেশি হলে সেই হারে বাড়বে শুল্ক। তিনি জানান, করোনার কারণে বিদেশে যাওয়া আসা একপ্রকার বন্ধ ছিল। করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর ফ্লাইট চালু হওয়ায় স্বর্ণ আসার পরিমাণও বেড়েছে। এর কারণ হতে পারে, প্রবাসীদের অনেকেই হয়তো কিছু স্বর্ণ কিনে রেখেছিলেন, যা আনতে পারেননি। হঠাৎ করে স্বর্ণের আমদানি বৃদ্ধির মূল কারণ এটিই হতে পারে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈধভাবে এত স্বর্ণ আমদানি সত্ত্বেও বাজারে এর প্রভাব নেই। আমদানি করা এ স্বর্ণগুলো বাজারে আসছে না, এমনই বলছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। এর কারণ কী হতে পারে, তা নিয়েও রয়েছে নানা বিশ্লেষণ। অনেকে নিজের পারিবারিক প্রয়োজনে স্বর্ণ এনে থাকেন। আবার কেউ কেউ বিক্রিও করেন। তবে বৈধভাবে এ রুটে আসা স্বর্ণ অন্য কোথাও যাচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নও রয়েছে। এদিকে, বৈধভাবে স্বর্ণ আমদানির পাশাপাশি অবৈধ পথে চালান আসাও থেমে নেই। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর হয়ে তা নিয়মিতই স্বর্ণ এসে থাকে, ধরাও পড়ে। সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর ধরা পড়েছিল বড় একটি স্বর্ণের চালান। ৮০টি স্বর্ণবারসহ আটক করা হয় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মচারীকে। অবৈধভাবে স্বর্ণ আসার পরিমাণ কমেছে কিনা, এ প্রসঙ্গে কাস্টমস সূত্র বলছে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। কারণ, করোনার কারণে ফ্লাইট অপারেশনই তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
×