ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পর্দা নামল বিপিএল ফুটবল লীগের, ফেয়ার প্লে ট্রফি আবাহনীর, সর্বোচ্চ গোলদাতা কিংসের রবসন, বসুন্ধরা কিংস ১-১ আবাহনী

বসুন্ধরা কিংসের শিরোপা উৎসব

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

বসুন্ধরা কিংসের শিরোপা উৎসব

রুমেল খান ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের টানা দ্বিতীয় শিরোপা বসুন্ধরা কিংসের জেতা হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই, তাও আবার চার ম্যাচ হাতে রেখেই। তারপরও তাদের একটি লক্ষ্য ছিল। সেটি ছিল এই লীগে মোট ৬৭ পয়েন্ট অর্জন করে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের ২০০৯-১০ মৌসুমের ৬৭ পয়েন্টের রেকর্ডের সমকক্ষতা অর্জন করা। এই লক্ষ্যে হাতে জমে থাকা তিন ম্যাচের প্রথম দুটিতেই জিতেছিল ‘দ্য কিংস’ খ্যাত বসুন্ধরা। কিন্তু নিজেদের শেষ ম্যাচটিতে জিতে শেষ ম্যাচটি আর রাঙাতে পারল না তারা। যাদের বিরুদ্ধে এই হোঁচটটি তারা খেল, সেই প্রতিপক্ষ আবার কাকতালীয়ভাবে ঢাকা আবাহনীই! সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মর্যাদার ও হাইভোল্টেজের এই ম্যাচে কিংস ১-১ গোলে ড্র করে আবাহনীর সঙ্গে। যদিও লীগের প্রথম পর্বে আবাহনীকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল কিংস। নিজেদের ২৪ ম্যাচে এটা কিংসের দ্বিতীয় ড্র। আগের ২১ জয়ে তাদের পয়েন্ট ৬৫। পক্ষান্তরে বিপিএল ফুটবলের সর্বোচ্চ ছয়বারের শিরোপাধারী আবাহনীর এটা অষ্টম ড্র। আগের ১৩ জয়ে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়ে লীগ শেষ করল তারা। সোমবার খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন কিংসের অধিনায়ক তপু বর্মণের হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। রানার্সআপ ট্রফি লাভ করে ৫২ পয়েন্ট পাওয়া শেখ জামাল ধানমÐি ক্লাব। লীগের ফেয়ার প্লে ট্রফি জিতেছে ঢাকা আবাহনী। আর ২১ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন কিংসের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন রবিনহো। লীগ চ্যাম্পিয়ন হবার সুবাদে কিংস আগামী মৌসুমে এএফসি কাপের গ্রæপ পর্বে সরাসরি খেলার এবং লীগ রানার্সআপ হবার সুবাদে শেখ জামাল ধানমণ্ডি একই আসরের প্রিলিমিনারি স্টেজে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল। সোমবার ম্যাচে কিংসের যেমন খলনায়ক ছিলেন ডিফেন্ডার-দলপতি তপু বর্মণ, তেমনি দলের ত্রাণকর্তাও ছিলেন তিনি। আত্মঘাতী গোল করে দলকে যেমন বিপদে ফেলেছিলেন, তেমনি গোল করে দলকে সমতায়ও ফিরিয়েছেন তিনিই। ২৮ মিনিটে কিংসের সীমানার ডান প্রান্ত থেকে আবাহনীর রাফায়েল অগাস্তোর ক্রস বক্সে বিপন্মুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই পাঠিয়ে দেন কিংস তপু (১-০)! তবে ঠিক নয় মিনিট পর আবার দলকে গোল পাইয়ে দেন তপুই। ৩৮ মিনিটে রবসন রবিনহোর ফ্রি কিক বক্সে পেয়ে দারুণ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন তপু (১-১)। একেই যেন বলে পাপের প্রায়শ্চিত্ত! ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উভয় দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করে খেলে ম্যাচটাকে বেশ উপভোগ্য করে তোলে। দু’দলই খেলে সমানতালে। এবারের লীগে কিংস সবচেয়ে বেশি গোল (৬০) করার পাশাপাশি সবচেয়ে কম গোলও (১০) হজম করেছে। সবচেয়ে বেশি গোল (৬৬) হজম করেছে অবমনিত হওয়া আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। এবারের লীগে ব্যক্তিগত সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন কিংসের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন রবিনহো। তার গোলসংখ্যা ২১। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল শেখ জামাল ধানমণ্ডির পা ওমর জোবের (১৯)। এবারের লীগে সবচেয়ে বেশি এ্যাসিস্ট করেছেন কিংসের আরেক ব্রাজিলিয়ান, মিডফিল্ডার জোনাথন ফার্নান্দেজ। ৮টি গোল নিজে করলেও গোল এ্যাসিস্ট করেছেন এর প্রায় দ্বিগুণ (১৫)। এই লীগে সবচেয়ে বেশি হলুদ কার্ড দেখেছেন (৯) শেখ জামালের উজবেক এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার আতাবেক ভালিদজানোভ। আর মোহামেডান সবচেয়ে বেশি ৪৮টি হলুদ কার্ড পেয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৪টি লাল কার্ড পেয়েছে শেখ জামাল। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি লাল কার্ড পেয়েছেন বিভিন্ন ক্লাবের মোট ১৪ ফুটবলার। এবারের লীগে ১৫৬ ম্যাচে মোট গোল হয়েছে ৪৭২টি। এর মধ্যে আত্মঘাতী গোল হয়েছে ৯টি। এর মধ্যে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি করেছে সবচেয়ে বেশি ২ গোল। হ্যাটট্রিক হয়েছে মোট ৯টি। এর মধ্যে পা ওমর জোবে সবচেয়ে বেশি ২টি হ্যাটট্রিক করেছেন। ১২ ম্যাচে গোলপোস্ট অক্ষত রেখে লীগের সেরা গোলরক্ষক ছিলেন কিংসের আনিসুর রহমান জিকো।
×