ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি টাঙ্গাইলের সখীপুরের নাকশালা-লাঙ্গুলিয়ার রাস্তায়

প্রকাশিত: ১৭:৪৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি টাঙ্গাইলের সখীপুরের নাকশালা-লাঙ্গুলিয়ার রাস্তায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের নাকশালা বাজার হতে লাঙ্গুলিয়া পর্যন্ত চার কিলোমিটার একটি কাঁচা রাস্তার। প্রতিনিয়তই এই রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়সহ এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীদের। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই রাস্তার। স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপিরা নির্বাচনকালে সড়কটি পাকা করণের বার বার প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস প্রদান করলেও এখন পর্যন্ত এই রাস্তার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। স্থানীয়রা জানায়, এই রাস্তা ধরেই যাদবপুর, পাহাড়কাঞ্চনপুর, দেওবাড়ী, দাড়িয়াপুর, কাঙ্গালীছেও, লাঙ্গুলিয়া এবং বোয়ালী পশ্চিমপাড়া এলাকার মানুষের চলাচল করতে হয়। ৭ গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব গ্রামের গর্ভবতী মা, মুমূর্ষূ রোগী, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবিদের সবচেয়ে বেশী কষ্ট পাহাতে হচ্ছে। তাদের কাদা-মাটিতে পায়ে হেটে প্রতিনিয়তই চলাচল করতে হচ্ছে। খানাখন্দ আর কাদামাটি পরিপূর্ণ সড়কটি দিয়ে গরু এবং ঘোড়ার গাড়ী ব্যতিত সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান, অটো চলাচল একেবারেই বন্ধ রয়েছে। জুতা খুলে পায়ে হেটে যেতেই অনেকে পা পিছলে পড়ে গিয়ে কাপড়চোপড় নষ্ট করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কেউবা কাদাযুক্ত কাপড়চোপড় নিয়ে লাজলজ্জা ভেঙে তাদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, চলতি বর্ষায় উপজেলার নাকশালা বাজার হতে লাঙ্গুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। বৃষ্টি হলেই চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোন প্রকার যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেটে যাওয়ায় অনেক কষ্টকর। জুতা খুলে প্যান্ট, লুঙ্গি এবং মেয়েরা পায়জামা ও শাড়ী কুচিয়ে ঝুকিপূর্ণভাবে চলাচল করছেন। অযোগ্য হয়ে পড়েছে এলাকার সবচেয়ে বড় বাজার নাকশালা বাজারে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য আনা নেয়া। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গর্ভবতী মা, মুমূর্ষূ রোগী, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবিদের কাদা পানিতে চলাচলে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির অসংখ্য খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে ওইসব এলাকাবাসীদের। কলেজ পড়ুয়া ছাত্র আশিকুর রহমান আশিক মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কত জায়গায় না কত উন্নয়ন করে দিচ্ছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমাদের এ রাস্তায় একটি ইটও পড়েনি। আমাদের প্রতিনিয়ত চলাচল করতে গিয়ে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় এমপিসহ কর্তৃপক্ষকে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি সড়কটি যাতে অতি দ্রুত পাকা করণ করেন। সড়কটি পাকা হলে সখীপুর হতে অবহেলিত এসব গ্রামের মানুষের কষ্ট কম হবে এবং যোগাযোগ আরও সহজ হবে। তাদের অতিরিক্ত অর্থ ও সময় ব্যয়ের পাশাপাশি রাস্তার দুর্ভোগ হতে রেহায় পাবেন। স্কুল পড়–য়া ছাত্রী লিমা আক্তার বলেন, আমাদের এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে হয় বৃষ্টি হলেই কাদা হয়, পানি জমে থাকে। গাড়ি তো দূরের কথা পায়ে হেটেই যাওয়ায় কষ্টকর। জুতা হাতে নিয়ে বোরকা কুচিয়ে যেতে হয়। আমাদের একটাই দাবি এই রাস্তা অতি দ্রুত পাকা করণের। স্থানীয় আব্দুল বাছেদ মিয়া, করিম মিয়াসহ অনেকেই জানায়, ছেলে-মেয়েদেরকে স্কুলে পাঠালে তারাও যেতে চায় না। কোনো রোগী বা গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে বিপদে পড়তে হয়। ঘোড়া বা গরুর গাড়ি ছাড়া কোনো বিকল্প থাকে না। যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতোয়ার জানান, আমাদের এমপি সাহেবের নিদের্শনায় নাকশালা-লাঙ্গুলিয়ার ২ কিলোমিটার রাস্তার ডিও লেটার পাশ হয়েছে। অতিদ্রুতই রাস্তার কাজ শুরু করা হবে।
×