ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের হস্তক্ষেপে শ্বশুরবাড়িতে গেলেন গৃহবধূ

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ২৭ জুলাই ২০২১

পুলিশের হস্তক্ষেপে শ্বশুরবাড়িতে গেলেন গৃহবধূ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে তার বাড়িতে ওঠেন স্ত্রী। সেখানে কিছুদিন ভালভাবে চলে। এরপর ধীরে ধীরে শুরু হয় স্ত্রীর ওপর নির্যাতন। ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছে নানা রকম প্রত্যাশা তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের। বাবা নেই। সেই প্রত্যাশা পূরণের ভুক্তভোগী মা আপ্রান চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু শ্বশুড়বাড়ির দাবিকৃত প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারায় ক্রমশই গৃহবধূর ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। স্বামীর সঙ্গে তার মিশতে মানা। সন্তান নিতে মানাসহ বিভিন্নভাবে মানসিক যন্ত্রনা দিতে থাকে শ্বশুড়ালয়। এক পর্যায়ে নির্যাতন সইতে পারেনি ভুক্তো ভোগী নারী নিজের কথা জানিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে লিখে পাঠান। মঙ্গলবার পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং) মোঃ সোহেল রানার পাঠানো এক বার্তায় এসব তথ্য জানা যায়। পুলিশ সদর দফতরে জানায়, এক পর্যায়ে সইতে না পেরে মেয়েটি তার শিশু সন্তানকে নিয়ে তার বিধবা মায়ের কাছে চলে যেতে বাধ্য হন। তার ও সন্তানের ভরণ-পোষণ কিংবা কোনো প্রকার খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন না স্বামী। কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন ওই নারী। কোনো মামলা মোকদ্দমায়ও যেতে চাননি। তার ধারণা, মামলা মোকদ্দমায় গেলে স্বামীর সঙ্গে তার সংসারের আর কোনো সম্ভাবনাই টিকে থাকবে না। ওই গৃহবধূ আরও লিখেছেন, বিয়ে তো একবারই হয়। স্বামী সন্তান নিয়ে তিনি সুখে থাকতে চান। সংসার ভাঙ্গতে চান না। তবে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক সংসার জীবন চান। নানাভাবে চেষ্টা করেছেন সমস্যা সমাধানের কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। বার্তা পেয়ে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং স্বামীর কর্মস্থল ও বর্তমান আবাসস্থল চট্রগ্রাম পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রেজাউল করিম মজুমদারকে বার্তাটি প্রেরণ করে উপযুক্ত আইনের আলোকে সমস্যাটি সমাধানের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন। গত ১৬ জুলাই পটিয়া থানার ওসির আন্তরিক উদ্যোগে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে ওই নারীকে সন্তানসহ তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করে বাড়িতে নিয়ে যায়। এআইজি সোহেল রানা জানান, তাদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। পটিয়া থানা ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ের কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে সে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে। উভয় পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছে মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। স্বামী-সন্তানসহ শ্বশুর বাড়ির সবার সঙ্গে আনন্দঘন ঈদ উদযাপনের ছবি পাঠিয়েছেন সেই নারী। স্বামী ও তার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। সর্বশেষ মঙ্গলবার তাদের উভয়ের সঙ্গে কথা বলেছে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। তারা উভয়েই জানিয়েছেন, শিশু সন্তানসহ তারা এখন বেশ ভালো আছেন। একটি সুখী জীবনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা। তাদের প্রত্যেকের প্রাপ্য আইনি অধিকার বাস্তবায়নে পুলিশ সক্রিয়ভাবে সব সময় পাশে থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এআইজি মিডিয়া জানান, ভুক্তভোগীর সর্বোচ্চ কল্যাণ ও সুরক্ষা বিবেচনায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও বিষয়াদির নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার পলিসি অনুসরণ করে থাকে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
×