ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেরিঘাট ও মহাসড়কে চাপ কমছে

ব্যস্ত হয়ে উঠছে রাজধানী, দুদিনে ফিরেছেন ১১ লাখ মোবাইলধারী

প্রকাশিত: ২৩:০১, ১৯ মে ২০২১

ব্যস্ত হয়ে উঠছে রাজধানী, দুদিনে ফিরেছেন ১১ লাখ মোবাইলধারী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরেছেন বিপুলসংখ্যক লোক। জীবন জীবিকার তাগিদে তাদের ফিরে আসায় আগের মতোই ব্যস্তময় ও স্বাভাবিক হয়ে উঠছে ঢাকা। গণপরিবহন থাকার পরও বিকল্প উপায়ে তাদের ফিরে আসায় চাপ কমেছে সড়ক মহাসড়ক, নৌপথ ও ফেরিঘাটগুলোতে। যদিও চলতি সপ্তাহজুড়েই বিক্ষিপ্তভাবে আরও কিছুসংখ্যক নাগরিক গ্রাম ছেড়ে আসবেন তাদের কর্মস্থলে। এদিকে ফিরে আসা নাগরিকদের পরিসংখ্যান কি হতে পারে তার একটা গড়পড়তা ধারণা দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে তিনি জানিয়েছেন- সোমবার পর্যন্ত রাজধানীতে ১১ লাখ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ফিরেছেন। দিন দিন এটা বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগের সব পয়েন্টেই ছিল মানুষের ফিরে আসার ভিড়। চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে আসা লোকজন সায়েদাবাদ প্রবেশমুখ দিয়ে ঢাকায় আসেন। দক্ষিণ ও পশ্চিমাংশের লোকজন গাবতলী ও উত্তরবঙ্গ থেকে আসেন সিরাজগঞ্জ টাঙ্গাইল হয়ে মহাখালী টার্মিনালে। নৌপথে যারা আসেন তাদের গতকাল মুন্সীগঞ্জ ও পাটুরিয়া ঘাটে তেমন বেগ পেতে হয়নি। সকালের দিকে কিছুটা ভিড় থাকলেও বিকালে এ দুটো ফেরিঘাটে কোন চাপ ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই মানুষজন ফিরেছেন। তবে উত্তরবঙ্গের লোকজনের চাপ ছিল যমুনার দুপাড়ে। তবে গণপরিবহন না থাকায় তাদের একটু খাটুনি করেই ফিরতে হচ্ছে ট্রাক পিকআপ ও হলারে করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঈদের ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে ফিরতে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে হাজার হাজার মানুষের এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাক-পিকআপ। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসে করে মানুষ গন্তব্য স্থলে গেলেও সেটা হাতেগোনা। একেকটি ট্রাকে যাচ্ছে ৫০-৬০ জন করে যাত্রী। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম হতে কড্ডা, নলকা ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত দেখা গেছে সব জায়গাতেই যাত্রী নিতে দাঁড়িয়ে আছে ট্রাক ও পিকআপ। এর মধ্যে কড্ডা ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা যেন ট্রাকস্ট্যান্ডে রূপ নিয়েছে। আর এতেই উঠে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষকে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক-পিকআপে করে হাজার হাজার যাত্রী যাচ্ছে ঢাকার উদ্দেশে। যাত্রী নিয়েই চলছে। তাই বাস বন্ধ করে রাখাটা উচিত হয়নি বলেও জানান তারা। এদিকে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস কিছু আসলেও সকল দূরপাল্লার বাস ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে মহাসড়ক ঘুরে কোথাও কোন যানজট বা তেমন কোন ধীরগতি দেখা যায়নি। মহাসড়কের কড্ডা এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শক মোঃ আব্দুল গণি বলেন, মহাসড়কে মানুষের প্রচুর চাপ আছে তবে দূরপাল্লার বাস চলতে না দেয়ায় ট্রাক-পিকআপে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। এ ধরনের গাড়ির চাপ থাকলেও কোন যানজট নেই। মহাসড়কে ঈদ পরবর্তী সময়ে শৃঙ্খলা ধরে রাখতে ও সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে গত দুদিনে ঢাকায় ফিরেছেন প্রায় ১১ লাখ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সোমবার রাতে তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এ তথ্য জানান। মন্ত্রী লিখেছেন, এখন ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষেরা ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। মাত্র দুদিনে ঢাকায় ফিরে আসা সিমের হিসাব। ওই পোস্ট থেকে জানা গেছে, ১৫ মে রাজধানীতে ফিরেছেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৭৭৩ জন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী। আর ১৬ মে রবিবার ঢাকায় ফিরেছেন ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৩১৩ জন ব্যবহারকারী। এর মধ্যে গ্রামীণফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৮, বাংলালিংকের ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৫, টেলিটকের ৮৭ হাজার ২৮৪ এবং রবির ৪৮ হাজার ৬২৯। এসবই ইউনিক ব্যবহারকারী। যারা একাধিক সিম ব্যবহার করেছেন তাদেরও একটি সিমের হিসাবে এই সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে। ব্যবহারকারীর সঙ্গে অন্য যারা ছিলেন তাদের এই হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে ঢাকায় ফেরা মোট মানুষের সংখ্যা জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে ক’দিন।
×