ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভাঙ্গুড়ায় ৫৬ পরিবার ৭ মাস বাড়ি ছাড়া

প্রকাশিত: ১৮:১৪, ৪ মে ২০২১

ভাঙ্গুড়ায় ৫৬ পরিবার ৭ মাস বাড়ি ছাড়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা ॥ খাসপুকুর দখল নিয়ে সংঘর্ষে পিতা পুত্র নিহতের মামলায় আসামি পক্ষের ৫৬ পরিবার ৭ মাসেও বাড়ি ফিরতে পারে নি। হত্যাকান্ডের পর ১ মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫৬ পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। শুধু তাই নয় উচ্ছেদকৃতদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ লুটে নেয়া হয়েছে।৭ মাস ধরে এসব পরিবারের জীবন জীবিকায় নেমে এসেছে মারাত্মক অচলাবস্থা। এ ঘটনাটি ভাঙ্গুড়া উপজেলার খাঁনমরিচ ইউনিয়নের দাসবেলাই গ্রামে ঘটেছে। জানা যায়, গত ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর উপজেলা দাসবেলাই গ্রামে সরকারি খাস পুকুর দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পিতা পুত্র নিহত হয়। নিহতের স্ত্রী শিউলি বেগম ১৮ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ প্রধান আসামীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে। এর পর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানসহ সকল আসামী আত্মসমর্পণ করার পর ৪ জন ছাড়া সকলকে আদালত জামিন দেন। কিন্তু বাদি পক্ষের কিছু আত্মীয় এ হত্যা মামলাকে পুঁজি করে আসামিদের পবিরারের নারী ও শিশুসহ সাধারণ মানুষকে প্রাণনাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে বাপ দাদার পৈত্রিক ভিটা ছাড়তে বাধ্য করেন। এসুযোগে গ্রামের মিরাজের পুত্র মোঃ আমজাদ হোসেন ও আজাহার আলীর পুত্র মোঃ লিটনের নেতৃতে মোসলেমের ছেলে আব্দুল গফুর,মিরাজের ছেলে ফরজ,মতলেবের ছেলে মজনু,আব্দুর হামিদের ছেরে ইউনুছ গং সজনদের আসামি পক্ষের ৫৬ পরিবারের ঘরে থাকা নগত টাকা,সোনা রোপা,ধান,চাল,পাট,সরিষা,ঘড়ের আসবাপ পত্র, দরজা জানালা পর্যন্ত লুটে নেয়।শুধু তাই নয় এদের য়েকটি পুকুরের মাছসহ প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পদ লুট করা হয়। এছাড়াও বিতাড়িত ৫৬ পরিবারের প্রায় ২শ বিঘা আবাদী জমি পতিত পরে রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধাসহ আসামিদের ৫৬ পরিবারের ২১১ জন নারী পুরুষ ও শিশু নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় সজনদের বাড়ি গত ৭ মাস ধরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে বলে জানা গেছে। লুটপাটের ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে পাবনা জুডিশিয়াল আদালতে ১৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। মামলার পরে যেন লুটপাটকারিরা আরও বেপড়োয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে বিতাড়িতরা। গত ৭ মাস ধরে বাড়ি ফিরতে বিভিন্নমহলে ধর্ণা দিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছে না। কিছুদিন আগে ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাকিবিল্লাহ, ভাঙ্গুড়া পৌর মেয়র মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল,সহকারী পুলিশ সুপার(চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরিন,ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন ও খানমরিচ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান উপস্থিত থেকে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদের বাড়ি ঘরে নিয়ে আসার চেষ্টা করেও পারেননি। ৫৬ পরিবারে এ দুরাবস্থার জন্য আমজাদ হোসেন ও আশরাফ আলী অন্যতম দায়ি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান আমরা কাউকে বাড়িতে আসতে মানা করিনি। তাদের বাড়ির মালামাল লুটর সাথে ও তারা জড়িত নয় বলে দাবি করেন।ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আসাদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি চাই হত্যা কারিদের বিচার হোক কিন্তু আসামিদের পরিবার ও আত্মীয়দের বাড়ি ঘড় লুটপাট ও ৭ মাস ধওে তাদের বিতাড়িত করা মোটেও ঠিক হচ্ছে না।ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, লুটপাটের ঘটনায় পাবনা জুডিশিয়াল আদালতে একটি মামলা করেছে তা এখন তদন্তধীন আছে। নিজ বাড়িতে উঠতে না দেয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×