ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এমসি কলেজে গণধর্ষণ ॥ বিচারিক কমিটির প্রতিবেদন আদালতে

প্রকাশিত: ১৬:২৬, ২০ অক্টোবর ২০২০

এমসি কলেজে গণধর্ষণ ॥ বিচারিক কমিটির প্রতিবেদন আদালতে

অনলাইন রিপোর্টার ॥ স্বামীর সঙ্গে সিলেটের এমসি কলেজে বেড়াতে যাওয়া এক নববধূকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে আদালতের গঠন করে দেওয়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা পড়েছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনে কী আছে তা জানা যায়নি। মঙ্গলবার বিচাপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি ওঠে। তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, ১৭৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি ১১টায় এসেছে। প্রতিবেদনটি দেখার সুযোগ হয়নি। এ অবস্থায় আগামী ১ নবেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন রাখা হচ্ছে। এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও এ ধর্ষণের ঘটনার প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন নজরে আনা আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন ভার্চুয়াল কোর্টে যুক্ত ছিলেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজের এ ধর্ষণের ঘটনার প্রকাশিত খবর-প্রতিবেদন নজরে এনে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন প্রয়োজনীয় আদেশের আরজি জানান। পরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে দেয়। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, মুখ্য মহানগর হাকিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সাধারণ) সমন্বয়ে এ তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় আদালত। ঘটনার শিকার গৃহবধূ, মামলার বাদি, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, হোস্টেল সুপার, এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী(যদি খুজে পাওয়া যায়) ও এই কমিটি যাদের প্রয়োজন মনে করবে, তাদের জবানবন্দি গ্রহণপূর্বক ঘটনার তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া সিলেটের পুলিশ কমিশনরকে বলা হয়, এই অনুসন্ধান কমিটির যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে। আর তদন্তকাজে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সরঞ্জাম সরবরাহ করতে সিলেটের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণ থেকে রক্ষায় অবহেলা ও কলেজ ক্যাম্পাসে অছাত্রদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কলেজ অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারের নীরবতায় তাদের বিরুদ্ধে যথযথ আইগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদিদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে। শিক্ষা সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য , রেজিস্ট্রার, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার, এমসি কলেজের হোস্টেল সুপারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। পরদিন সকালে ওই নারীর স্বামী এ ঘটনায় শাহ পরান থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ধর্ষণের ঘটনায় মোট আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ তিন সদস্যের ওই কমিটি গঠন করে গত ২৮ সেপ্টেম্বর আদেশ জারি করে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের(মাউশি) পরিচালক(কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। মাউশির সিলেট অঞ্চলের উপ-পরিচালককে (কলেজ) সদস্য এবং মাউশির সহকারী পরিচালককে (কলেজ-১) সদস্য সচিব করা হয় ওই কমিটিতে।
×