ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এরা আশ্রয় পাচ্ছে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায়

রাখাইন ছেড়ে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা, সুমাত্রায় উদ্ধার ২৯৭

প্রকাশিত: ২৩:০২, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

রাখাইন ছেড়ে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা, সুমাত্রায় উদ্ধার ২৯৭

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ছেড়ে রোহিঙ্গাদের পলায়ন তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর এখন আর সে সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে এরা মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশমুখী হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন সাগরে ভাসমান থাকার পর সোমবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে আচে উপকূল থেকে ২৯৭ রোহিঙ্গা উদ্ধার হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১০২, নারী ১৮১ ও ১৪ শিশু রয়েছে। ২০১৫ সালের পর এটাই সে দেশে উদ্ধারে সবচেয়ে বড় ঘটনা বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এসব রোহিঙ্গার দল কোথা থেকে সেখানে পৌঁছল তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও এটা নিশ্চিত যে রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত নির্যাতনের মুখে এরা পালিয়েছে। এর আগেও দলে দলে রোহিঙ্গারা রাখাইন থেকে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও পুরনো রোহিঙ্গা নেতাদের নানামুখী নেতিবাচক প্রবণতার কারণে রাখাইন রাজ্যে ভবিষ্যতে হয় তো একটি রোহিঙ্গা পরিবারও থাকা সম্ভাবনা নেই। এরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ মুখী হয়ে আছে। কিন্তু বর্তমানে ১২ লক্ষাধিক আশ্রিত হওয়ার পর বাংলাদেশ এখন আর রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করছে না। তবে ইতোমধ্যে আন্দামান সাগরে ভাসমান থাকার পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা কৌশলে সমুদ্রপথে তাদের বাংলাদেশের সীমানায় নিয়ে আসে। এ ধরনের একটি দলকে ভাসান চরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৬ আগস্টের রাতের পরবর্তী ৫ মাস যেভাবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল নামে তা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ হয়। এখনও ফাঁক ফোঁকরে রোহিঙ্গা আগমনের প্রচেষ্টার কমতি নেই। তবে বর্তমানে রাখাইন থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় পাচ্ছে। সোমবার যে ২৯৭ রোহিঙ্গার দলকে ইন্দোনেশিয়ায় উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি আচে উপকূলের লোকসিউমাউত এলাকায়। একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা বোঝাই হয়ে এরা উপকূলে পৌঁছে। এর ২ মাস পূর্বে একই দ্বীপে আরও ১০০ রোহিঙ্গাকে একটি নৌকা থেকে উদ্ধার করে ইন্দোনেশিয়া সরকার। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, উজং বালাংগ গ্রামের প্রধান মুনির আলী জানিয়েছেন, সকালে তারা দেখতে পান একটি নৌকা কিছু লোককে নিয়ে উজং বালাংগ এর উপকূলের দিকে আসছে। তখন তারা নিরাপদে তীরে পৌঁছতে সাহায্য করে। তবে তারা কতদিন সাগরে ভাসমান অবস্থায় ছিল এবং কোন ধরনের নৌকায় ভেসে দ্বীপের উপকূলের পৌঁছলেন সেটি এখনও স্পষ্ট হয়নি। ওই এলাকার সেনাপ্রধান রনি মাহেন্দ্র জানিয়েছেন, দলটির কয়েকজন সদস্য অসুস্থ থাকায় তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লোকসিউমাউতে রেড ক্রসের প্রধান জুনাইদি ইয়াহা জানিয়েছেন, তাদের আপাতত সেখানে রাখা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, পরে তাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। তিনি বলেন, করোনা মহামারীতে এসব রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রধান চিন্তার বিষয়। এর আগে প্রায় ৪ মাস সাগরে ভেসে থাকার পর গত জুন মাসে ১০০ রোহিঙ্গাকে নিয়ে ওই দ্বীপে একটি নৌকা পৌঁছায়।
×